বাংলাদেশের দারিদ্র্যতা কি জাদুঘরে রাখা সম্ভব

 





সুস্বাস্থ্যই  সকল সুখের মূলঃ সুস্থ থাকার উপায়দারিদ্র্যতা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এবং চ্যালেঞ্জিং সামাজিক সমস্যা। আপনি দেখতে পাবেন এটি শুধু অর্থনৈতিক সংকট নয়, বরং সামাজিক বৈষম্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার অভাব এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার একটা বড় কারণ । তবে, বর্তমান দুনিয়ায় অনেক দেশ দারিদ্র্য হ্রাসে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং  সাফল্য অর্জন করেছে। 





বাংলাদেশও দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে, তবে প্রশ্ন থেকে যায়, এই দারিদ্র্যতা কি সত্যিই একদিন জাদুঘরে রাখা সম্ভব? অর্থাৎ, এক সময় কি বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে দারিদ্র্যমুক্ত হতে পারবে? এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশের দারিদ্র্যের বর্তমান অবস্থা, এর কারণ, দারিদ্র্য বিমোচনে নেওয়া উদ্যোগ এবং ভবিষ্যতে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের সম্ভাবনা নিয়ে বিশদ আলোচনা করব।

দারিদ্র্যের সংজ্ঞা ও প্রেক্ষাপটঃ বাংলাদেশে দারিদ্র্যতা  কি জাদুঘরে রাখা সম্ভব

দারিদ্র্য বলতে সাধারণত সেই অবস্থাকে বোঝানো হয়, যেখানে একজন ব্যক্তি বা পরিবার মৌলিক চাহিদা ( খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সংস্কৃতি ) পূরণ করতে অক্ষম থাকে। এটি শুধু অর্থনৈতিক সংকট নয়, বরং সামাজিক, রাজনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক সমস্যার সঙ্গেও সম্পর্কিত।

বিশ্ব ব্যাংকের মতে, দিনে ২.১৫ মার্কিন ডলারের কম আয়ে জীবনযাপন করা চরম দারিদ্র্যের নির্দেশক। তবে দারিদ্র্য শুধুমাত্র আয়ের পরিমাণ দ্বারা নির্ধারিত হয় না, বরং এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান এবং সামাজিক সুযোগ-সুবিধার অভাবকেও বোঝায়।

আরো পড়ুনঃ

দারিদ্র্যের প্রেক্ষাপট

দারিদ্র্য বিশ্বব্যাপী একটি জটিল সমস্যা যা বিভিন্ন অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক কারণের ফলে সৃষ্টি হয়। নিম্নে এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট আলোচনা করা হলো:

১। অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট

অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি আলোচনা করা হলো:

কর্মসংস্থানের অভাব: কর্মসংস্থানের অভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা। এটি সাধারণত কয়েকটি কারণে ঘটে—কর্মসংস্থানের অভাবের কারণ:

১। অর্থনৈতিক মন্দা – অর্থনীতির দুর্বলতা চাকরির বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

২।  শিল্প ও প্রযুক্তির উন্নয়ন – স্বয়ংক্রিয় মেশিন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক চাকরি প্রতিস্থাপন করছে।

৩। জনসংখ্যার বৃদ্ধি – চাকরির সুযোগ সীমিত থাকলেও কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে প্রতিযোগিতা বেড়ে যায়।

৪। শিক্ষা ও দক্ষতার ঘাটতি – প্রয়োজনীয় দক্ষতা না থাকলে কর্মসংস্থান পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।

৫। সরকারি নীতির সীমাবদ্ধতা – সঠিক কর্মসংস্থান নীতি না থাকলে বেকারত্ব বাড়তে পারে।

৭। কৃষি নির্ভরতা ও শিল্পের অভাব – অনেক দেশে কৃষির ওপর নির্ভরতা বেশি, কিন্তু শিল্প ও প্রযুক্তিখাতের প্রসার কম।

সমাধানের উপায়:

কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা বৃদ্ধি করা – দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

উদ্যোক্তা তৈরি ও স্টার্টআপ সহায়তা – নতুন ব্যবসা শুরুতে সহজ ঋণ ও সুযোগ প্রদান করা।

সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি – অবকাঠামো উন্নয়ন ও নতুন শিল্প স্থাপনে বিনিয়োগ বাড়ানো।

আন্তর্জাতিক বাজারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি – বিদেশে চাকরির সুযোগ তৈরি করা।

কৃষি ও কুটির শিল্পের উন্নয়ন – বিকল্প আয়ের পথ তৈরি করা।

নিম্ন মজুরিঃ "নিম্ন মজুরি" বলতে সাধারণত শ্রমিক বা কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত সর্বনিম্ন আইনি বেতন বোঝানো হয়, যা একটি দেশের সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে। এটি সাধারণত শ্রমিকদের ন্যূনতম জীবিকা নিশ্চিত করার জন্য প্রণয়ন করা হয় এবং বিভিন্ন দেশে এটি ভিন্ন হতে পারে।

সম্পদের অসম বণ্টনঃ সম্পদের অসম বণ্টন বলতে বোঝায় যখন সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পদ (আয়, জমি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি) সমানভাবে বণ্টিত হয় না। এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক যা ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি  করে।

অসম বণ্টনের কারণসমূহ: ১। অর্থনৈতিক কাঠামো: পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে সম্পদ সাধারণত ধনীদের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়, ফলে গরিবরা আরও গরীব হয়।

২। শিক্ষা ও দক্ষতার পার্থক্য: উচ্চশিক্ষা ও বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা বেশি উপার্জন করেন, যা অসম বণ্টনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৩। উত্তরাধিকার ও বংশগত সুবিধা: কিছু পরিবার বা ব্যক্তি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সম্পদ পেয়ে থাকেন, যেখানে অন্যরা তা পায় না।

৪। রাজনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য: ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা নীতি নির্ধারণের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করেন, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে সম্পদের প্রবাহ কমিয়ে দেয়।

৫। কর ও নীতিগত সমস্যা: অনেক দেশে কর ব্যবস্থায় ধনীদের জন্য সুবিধাজনক ব্যবস্থা থাকে, যা সম্পদকে আরো পঞ্জিভূত করে।

৬। বৈশ্বিক কারণ: উপনিবেশবাদ, বহুজাতিক কোম্পানির আধিপত্য, ও বাণিজ্যিক বৈষম্য গরিব দেশগুলোর সম্পদ আহরণে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে,

ধনী-গরিবের বৈষম্য বৃদ্ধি পায়, সামাজিক অস্থিরতা ও অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়,  স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ন্যায্য সুযোগ হ্রাস পায়, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেয় ।

সমাধানের উপায়: শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে, ন্যায্য কর ব্যবস্থা প্রয়োগ করা, সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বৃদ্ধি করা,  ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রদান, দুর্নীতি দমন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, সম্পদের ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করা হলে সমাজে স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নতি ত্বরান্বিত হবে ।

মুদ্রাস্ফীতি ও ক্রয় ক্ষমতা হ্রাসঃ মুদ্রাস্ফীতি কী ?

মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) হলো অর্থনীতিতে পণ্যের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার প্রক্রিয়া। যখন কোনো নির্দিষ্ট সময়ে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, তখন মুদ্রার মূল্য কমে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায়।

মুদ্রাস্ফীতির কারণঃ

১. চাহিদা টানযুক্ত মুদ্রাস্ফীতি (Demand-Pull Inflation): যখন বাজারে পণ্যের চাহিদা বেশি কিন্তু সরবরাহ কম থাকে, তখন দাম বৃদ্ধি পায়।

২. ব্যয়-চাপসৃষ্ট মুদ্রাস্ফীতি (Cost-Push Inflation): যখন উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় (যেমন কাঁচামাল, শ্রমের মজুরি, জ্বালানির দাম), তখন পণ্যের দামও বেড়ে যায়।

3. মুদ্রার অতিরিক্ত সরবরাহ (Excess Money Supply): যখন বাজারে বেশি অর্থ প্রবাহিত হয়, তখন টাকার মূল্য কমে যায় এবং দাম বৃদ্ধি পায়।

4. বৈশ্বিক কারণ (Global Factors): আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি বা আমদানি ব্যয় বাড়লে দেশীয় বাজারে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়ে।

ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস কীভাবে হয় ?

ক্রয় ক্ষমতা (Purchasing Power) হলো নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে একজন ব্যক্তি কতটা পণ্য বা সেবা কিনতে পারেন। মুদ্রাস্ফীতির কারণে যখন একই পরিমাণ অর্থ দিয়ে কম পণ্য বা সেবা কেনা সম্ভব হয়, তখন সেটাকে ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস বলা হয়।

মুদ্রাস্ফীতির ফলে ক্রয় ক্ষমতা হ্রাসের প্রভাবঃ

১।  জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি – নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, ফলে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে।

২। সঞ্চয় কমে যায় – যেহেতু পণ্যের দাম বেড়ে যায়, তাই মানুষ তাদের আয় থেকে কম সঞ্চয় করতে পারে।

৩। বিনিয়োগের উপর প্রভাব – উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, কারণ ক্রেতাদের চাহিদা কমে যায়।

৪। মজুরির মূল্যহ্রাস – বেতন বা মজুরি বৃদ্ধি না পেলে মুদ্রাস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় কমে যায়।

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপায়ঃ

১।  মুদ্রানীতি নিয়ন্ত্রণ – কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে অতিরিক্ত টাকা সরবরাহ কমাতে পারে।

২। সরবরাহ চেইন উন্নত করা – উৎপাদন খরচ কমিয়ে পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে।

৩। পরিবর্তিত রাজস্ব নীতি – সরকার কর ও শুল্ক ব্যবস্থা পরিবর্তন করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

 ৪। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা – বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলে বাজারে পণ্য ও সেবার সরবরাহ বাড়বে, ফলে দাম কমবে।

মুদ্রাস্ফীতির হার যদি নিয়ন্ত্রিত না হয়, তবে এটি অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রাকে কষ্টসাধ্য করে তুলতে পারে। তাই এটি নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আরো পড়ুনঃ

২। সামাজিক প্রেক্ষাপট

৪। উদ্যোক্তা উন্নয়ন – নিজে কিছু করার জন্য প্রশিক্ষণ ও অনুপ্রেরণা দেওয়া।

স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতাঃ স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতা বিভিন্ন কারণে দেখা দিতে পারে, যা ব্যক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত হতে পারে। এখানে কিছু প্রধান সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হলোঃ

১. অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতাঃ স্বাস্থ্যসেবার ব্যয়বহুলতা (চিকিৎসা, ওষুধ, পরীক্ষা), দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়া,  বীমা সুবিধার অভাব বা সীমিত স্বাস্থ্যবিমা কাভারেজ।

২. ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতাঃ  প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাসপাতাল বা ক্লিনিকের অভাব, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর সমস্যা, দুর্গম এলাকায় চিকিৎসকদের স্বল্পতা ।

৩। মানবসম্পদের অভাবঃ  দক্ষ চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান ও স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতি, অতিরিক্ত রোগীর চাপের কারণে পর্যাপ্ত সেবা দিতে না পারা,  চিকিৎসকদের শহরকেন্দ্রিক অবস্থান ও গ্রামে স্বল্পসংখ্যক চিকিৎসক।

৪। স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মানের সমস্যাঃ নিম্নমানের চিকিৎসা ও অনিয়ন্ত্রিত ওষুধের ব্যবহার, প্রয়োজনীয় আধুনিক প্রযুক্তির অভাব, সরকারি হাসপাতালগুলোর ব্যবস্থাপনা সমস্যা।

৫।  সচেতনতার অভাবঃ স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবের কারণে দেরিতে চিকিৎসা নেওয়া, প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা ও নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষার অভ্যাস না থাকা, কুসংস্কার ও ভুল ধারণার কারণে চিকিৎসা না নেওয়া।

৬।  রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতাঃ  স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের অভাব,  সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব।

৭। পরিবেশগত সীমাবদ্ধতাঃ  দূষণ, অপরিচ্ছন্নতা ও সংক্রামক ব্যাধির বিস্তার, নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের সমস্যা,  জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নতুন রোগের বৃদ্ধি, । এসব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন, যাতে সবার জন্য সহজলভ্য ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়।

নারী ও শিশুদের প্রতি বৈষম্যঃ

৩। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটঃ দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি

"দুর্নীতিী ও স্বজনপ্রীতি" একটি নেতিবাচক ধারণা যা সমাজে বা সরকারে স্বজনদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব বা অবৈধ সুবিধা প্রদান করে থাকে । এর মধ্যে কিছু সাধারণ কর্মকাণ্ড হতে পারে, যেমন পরিচিতি বা সম্পর্কের মাধ্যমে কাজ বা সরকারি চুক্তি লাভ অথবা কারও পক্ষ থেকে অবৈধভাবে উপকার নেওয়া। এটি সাধারণত সমাজের ন্যায়বিচার এবং শৃঙ্খলা ব্যাহত করে এবং দেশের উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও যুদ্ধঃ

রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং যুদ্ধ সাধারণত একে অপরের সাথে সম্পর্কিত থাকে এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন বা অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। রাজনৈতিক অস্থিরতা তখন ঘটে যখন সরকারের নীতি, সামাজিক শ্রেণির মধ্যে অসন্তুষ্টি  অথবা অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কারণে দেশটিতে চাপ তৈরি হয়। এই চাপ কখনো কখনো সহিংস সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে, যা যুদ্ধের কারণ হতে পারে।

যুদ্ধের সময় সাধারণত রাষ্ট্রের সীমা বা ক্ষমতার জন্য যুদ্ধ হয়, তবে এটি অনেক সময় রাজনৈতিক বা আদর্শিক পার্থক্যের কারণে ঘটতে পারে, যা গভীর রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করে। যুদ্ধের ফলে মানবিক বিপর্যয়, অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং সমাজের নানা স্তরের ক্ষতি হতে পারে। 

৪। প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত প্রেক্ষাপট ঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগ (বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়)

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এমন ধরনের বিপর্যয় যা প্রাকৃতিক কারণের জন্য ঘটে। এটি সাধারণত মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে অন্যতম হলোঃ

১। ভূমিকম্প – পৃথিবীর মাটির তলায় তড়িৎ গতির পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীকে কম্পিত করে।

২। ঘূর্ণিঝড় – প্রবল বাতাস ও বৃষ্টি নিয়ে আসে এবং বড় ক্ষতি করতে পারে।

৩। বন্যা – অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে নদী বা জলাশয়ের পানি উপচে পড়ে এবং ভূমির বিশাল অংশকে পানিতে ডুবিয়ে দেয়।

৪। ভূমিধবস – পাহাড় বা টিলার মাটি সরে যাওয়া।

৫।  খরা – দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে জমির আর্দ্রতা কমে যায়, কৃষিতে ক্ষতি হয়।

৬। সুনামি – সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্প বা অগ্ন্যুৎপাতের কারণে বিশাল তরঙ্গ সৃষ্টি হয়ে উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত করে। 

বাংলাদেশে দারিদ্র্যের বর্তমান অবস্থা: বাংলাদেশে দারিদ্র্যতা  কি জাদুঘরে রাখা সম্ভব

বাংলাদেশ, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি উন্নয়নশীল দেশ। গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০০০ সালে যেখানে বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪৮.৯% দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল, ২০২২ সালে তা নেমে এসেছে ১৮.৭%-এ।

তবে, এখনো দেশের এক বিশাল জনগোষ্ঠী চরম দারিদ্র্যে৷ সীমার নিচে বাস করছে, বিশেষত গ্রামাঞ্চল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে। করোনাভাইরাস মহামারি দারিদ্র্য বিমোচনের গতি কিছুটা শ্লথ করেছে, তবে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের ফলে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

দারিদ্র্যের প্রধান কারণঃ বাংলাদেশে দারিদ্র্যতা  কি জাদুঘরে রাখা সম্ভব

বাংলাদেশে দারিদ্র্যের পিছনে বিভিন্ন কারণ নিম্নে উল্লেখ  হলো:

১।  অর্থনৈতিক বৈষম্য – শহর ও গ্রামাঞ্চলের মধ্যে আয়ের বিশাল পার্থক্য। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে প্রায় ৮০% মানুষ বাস করে। এদের অধিকাংশ অর্থনৈতিক বৈষম্য শিকার। আধুনিক নাগরিক সুবিধা থেকে অনেকাংশে বঞ্চিত।

 ২। শিক্ষার অভাব – নিম্নমানের শিক্ষা ও কর্মমুখী দক্ষতার ঘাটতি। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা খুবই নিম্নমানের। দীর্ঘদিন ধরে প্রাচীন আমলের পদ্ধতি চালু আছে। এই শিক্ষার মাধ্যমে কেরাণীগিরি করা ছাড়া কোন কারিগরি বা টেকনিকেল কর্মে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হয় না। 

৩। বেকারত্ব – কর্মসংস্থানের অভাব ও স্বল্প মজুরির চাকরি। বেকারত্ব বাংলাদেশের একটা বড় অভিশাপ।বেকারত্বের কারণে বাংলাদেশে দারিদ্রের হার বেশি। 

৪।  প্রাকৃতিক দুর্যোগ – প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষিভিত্তিক জীবিকার সংকট। প্রতি বছর বাংলাদেশের বন্যা জলেশ্বর ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদির কারণে অসংখ্য মানুষ অভাব অনটনে পড়ে যাবে। ফলে দারিদ্র্যের হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়। 

৫। দুর্নীতি – সরকারী সহায়তা ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম। দুর্নীতি বাংলাদেশের জন্য এক সংক্রামক ব্যাধি। মন্ত্রী, উপমন্ত্রী,  প্রতিমন্ত্রী, সরকারি আমলা, সচিব, পুলিশ, আইন আদালত থেকে শুরু করে সর্বত্র  যেন দুর্নীতির  প্রতিযোগিতা চলে। এসব কারণে দেশের উন্নতির চেয়ে দরিদ্র লোকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

৬। অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা – দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যয়বহুল ও সীমিত চিকিৎসা । বাংলাদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল এবং ব্যয়বহুল. যেখানে খাদ্য ও বস্ত্রের ব্যয় মেটাতে পারেনা সেখানে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে যে য়ে আরো বেশি দারিদ্রতার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে।

দারিদ্র্য নির্মূলের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ ও সাফল্যঃ বাংলাদেশে দারিদ্র্যতা  কি জাদুঘরে রাখা সম্ভব

বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

১. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি

বাংলাদেশ সরকার দারিদ্রতা বিমোচনের জন্য বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ইত্যাদি চালু করেছে এর মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং দারিদ্র থেকে নিজেদেরকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে এছাড়াও ১০ টাকা কেজি চাল প্রকল্প চালু করেছে এর মাধ্যমে অল্প খরচে তাদের খাদ্যের অভাব পূরণ করতে পারছে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার জন্য উপবৃত্তি কর্মসূচি চালু করেছে এর মাধ্যমে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাবে এবং একটি শিক্ষিত জাতি হলে দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে.

২. ক্ষুদ্রঋণ ও নারী ক্ষমতায়ন

গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক এবং অন্যান্য এনজিও বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি চালু করেছে হলে লক্ষ লক্ষ দরিদ্র পরিবারকে স্বাবলম্বী করেছে এছাড়াও নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস কর্মসূচি চালু করেছে নারীদের ক্ষমতা উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং সরকারি চাকরিতে ও প্রশাসনে নারীদেরকে পদায়ন করার ব্যবস্থা করেছে

৩. অবকাঠামো উন্নয়ন

গ্রামভিত্তিক অর্থনীতি মজবুত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন ও সড়ক উন্নয়ন মূলক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া রোড ঘাট নির্মাণের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা উন্নততর করার জন্য নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।এই গ্রামীন অবকাঠামো  উন্নত হলে মানুষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে এবং দারিদ্র্য বিমোচনের পথ প্রশস্থ হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। এজন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রচুর পরিমাণ বাজেট ধার্য করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে বাংলাদেশও এ  খাতে পিছিয়ে নেই।

৪. শিক্ষার সম্প্রসারণ

দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে সরকার বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচি চালু করেছে। এর মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠী যারা তাদের ছেলেমেয়েদের ঠিকমতো লেখাপড়া খরচ চালাতে পারেনা তাদের জন্য বিশাল উপকার সাধিত হচ্ছে। এছাড়া গরিব শিক্ষার্থীদের  উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। গরিব ছাত্র ছাত্রীদের দ্বারা তাদের পিতা-মাতা শিশুশ্রমে নিয়োজিত করছে। তাদের মাঝে শিক্ষা উপবৃত্তি ও বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের মাধ্যমে পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।

আরো পড়ুনঃ

৫. কৃষিখাতে উন্নয়ন 

আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার কৃষি খাতে উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দেশের জিডিপিতে কিসের অবদান ১৩.৩১ শতাংশ। কৃষি উন্নয়ন মানে দেশের উন্নয়ন কৃষি আমাদের দেশের অর্থনীতির একটি বিশাল চালিকাশক্তি। কিশোর উন্নয়নে উন্নতমানের বীজ উৎপাদন সারের মূল্য কমানো, সুষম সার ব্যবহার করা। এছাড়াও কৃষির উন্নয়নের জন্য হাই স্পিড রোটারি টিলার, বীজ বপন যন্ত্র নালা তৈরির জন্য বাড়ি ব্লেড প্লান্টার গুটি সার প্রয়োগ যন্ত্র ইত্যাদি কৃষি খাতে উন্নয়নের সহায়ক শক্তি।

প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ভর্তুকি প্রদানএর ব্যবস্থা করা অতীব জরুরী। প্রান্তিক কৃষকদের উন্নত মানের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করা এবং তাদের কৃষি উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত জ্ঞান প্রদান করাও কিসের জন্য সহায়ক শক্তি। এইসব কর্মসূচির ফলে দেশের দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তবে, এগুলো পর্যাপ্ত নয় ।

দারিদ্র্যকে "জাদুঘরে রাখা" বলতে কী বোঝায়ঃ বাংলাদেশে দারিদ্র্যতা  কি জাদুঘরে রাখা সম্ভব

"দারিদ্র্যকে জাদুঘরে রাখা" বাক্যটি আসলে একটি কাল্পনিক অর্থ ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ হলো, একটি সময় আসবে যখন দারিদ্র্য শুধুমাত্র ইতিহাসের একটি অধ্যায় হবে—একটি অতীতের সমস্যা, যা মানুষ কেবল জাদুঘরে গিয়ে দেখতে পারবে, বাস্তবে নয়। কিন্তু এটি কি বাস্তবে সম্ভব? যদি সম্ভব হয়, তাহলে কিভাবে?

এটি কি বাস্তবে সম্ভব ? – বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণঃ

দারিদ্র্যকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব কি না, তা নির্ভর করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর:

১. অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বনাম সম্পদের সুষম বন্টন

শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়লেই দারিদ্র্য দূর হবে না, যদি সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত না করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় হচ্ছে, কিন্তু আয়বৈষম্য রয়ে গেছে। বাংলাদেশকে সোনার বাংলা বলা হয়। সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষের প্রয়োজন। এজন্য মানব সম্পদকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা সম্ভব এবং সম্পদের সুষম বন্টন অর্থনৈতিক উন্নয়নের বড় চাবি।

২. প্রযুক্তির ব্যবহার

ডিজিটাল অর্থনীতি, কৃষি প্রযুক্তি এবং স্বয়ংক্রিয় শিল্পের প্রসার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার  নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে মোবাইল ফোন স্মার্টফোন ট্যাবলেট কম্পিউটার ল্যাপটপ হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার নেটওয়ার্ক মডেম রাউটার রাউটার ওয়াইফাই লাই ফাই তথ্য প্রক্রিয়াকরণ তথ্য সঞ্চয় এবং তথ্যের সত্যতা যাচাই এর জন্য এর জন্য ডিভাইস ডিজিটাল টেলিভিশন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৩. জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা

বাংলাদেশ একটি জলবায়ু-সংকটাপন্ন দেশ। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং নদীভাঙন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকাকে প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে ফেলে। টেকসই উন্নয়ন না হলে দারিদ্র্য নির্মূল অসম্ভব।

৪. শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন

একটি শিক্ষিত ও দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি না করতে পারলে, দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গঠন কঠিন হবে। এজন্য আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর  শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যুব সমাজকে ডিজিটাল বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাহলে শিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে।

৫. দুর্নীতি হ্রাস

সরকারি ও বেসরকারি খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। সৎ, যোগ্য ও দুর্নীতিমুক্ত  জনশক্তি গড়ে তুলতে পারলে একটি উন্নত সমাজ ওদেশ নির্মাণ করা সহজ হবে। সেই সাথে দারিদ্র্যতাকে জাদুঘরে রাখা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

উন্নত বিশ্বের অভিজ্ঞতা ও বাংলাদেশে প্রয়োগযোগ্যতা অনেক উন্নত দেশ দারিদ্র্য বিমোচনে সফল হয়েছে, যেমন:

১। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো – নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ড ইত্যাদি দেশগুলি দারিদ্র্য বিমোচনে সামাজিক কল্যাণ ব্যবস্থা ও সমতা নিশ্চিত করেছে এবং সফল হয়েছে।

২। চীন – ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে ৮০০ মিলিয়নের বেশি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে উত্তরণ ঘটিয়েছে। চীন বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটিয়েছে। সারাবিশ্বে চায়না তাদের উৎপাদিত পণ্য দ্বারা উন্নত এবং অনুন্নত দেশগুলির  বাজার  দখল  করে  নিয়েছে।

বাংলাদেশও যদি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটায়, তবে একদিন সম্পূর্ণ দারিদ্র্যমুক্ত হওয়া সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ

দারিদ্র্য নির্মূলের জন্য করণীয়ঃ  বাংলাদেশে দারিদ্র্যতা  কি জাদুঘরে রাখা সম্ভব

১. মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা

২. বেকারত্ব কমাতে শিল্প ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন

৩. নারীর ক্ষমতায়ন ও প্রাপ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

৪. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও কৃষি খাতের বিকাশ

৫. দুর্নীতি দমন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা

আমাদের শেষ কথা

দারিদ্র্য শুধু একটি ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সমস্যা নয়; এটি একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। দারিদ্র্য দূর করতে টেকসই উন্নয়ন, সমতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি, এবং দক্ষ প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উপরোক্ত বিষয় গুলি যদি প্রতিষ্ঠা করা যায় তাহলে আপনি দেখতে পাবেন বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে অনেক দূর এগিয়েছে, তবে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ বাকি আছে। দারিদ্র্য সম্পূর্ণভাবে "জাদুঘরে রাখা" সম্ভব কি না, তা নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের উপর।

 আমাদের এসব আর্টিকেল আপনার ভালো লাগে আপনি আমাদের সাথেই থাকবেন আমাদের ওয়েবসাইটে বিচরণ করবেন তাহলে নতুন নতুন বিষয় আপনাদের সামনে উপস্থাপন  করব যদি আমরা সমতা, প্রযুক্তি ও শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারি, তাহলে হয়তো একদিন দারিদ্র্য শুধু অতীতের একটি গল্প হয়ে উঠবে—একটি স্মৃতি, যা শুধু জাদুঘরে স্থান পাবে।





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url