কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি খামার বিশাল অবদান রেখে চলেছে। এই খামারের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ফসল উৎপাদন পশুপালন পোল্ট্রি ফার্ম ডেইরি ফার্ম মৎস্য খামার ইত্যাদি।
আর কৃষির খামার যদি সঠিক পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনা অভিজ্ঞতা দ্বারা পরিচালনা করা যায় তাহলে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। ডিজিটাল পদ্ধতিতে কৃষি উৎপাদন করলে বেশি লাভবান হওয়া যায় এবং দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখা সম্ভব।
পেজ সূচিপত্রঃ কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
কৃষি খামার কি
কৃষি খামার কত প্রকার ও কি কি
কৃষি খামার করতে কি ধরনের প্রস্তুতি দরকার
কৃষি খামার কিভাবে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা করা যায়
কৃষি খামারে কি ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়
একটা আদর্শ কৃষি খামারের বৈশিষ্ট্য
কোন ধরনের কৃষি ব্যবসা করবেন
ছাদ কৃষি ব্যবসায় কি লাভজনক
আমাদের শেষ বক্তব্য
কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
কৃষি খামার থেকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা যায়। আপনি যদি কৃষিভিত্তিক খামার গড়ে তুলতে চান তাহলে দেরি না করে এখনই শুরু করে দিতে পারেন। গ্রামে হোক কিংবা শহরে হোক আপনার সুবিধা জনক স্থানে আপনি এই খামার গড়ে তুলতে পারেন।
মানুষের জীবন নদীর মত.মানুষের জীবন জীবিকার জন্য বহুবিধ পেশা বর্তমান আছে । তার মধ্যে কৃষি খামার প্রতিষ্ঠা করে বেকার সমস্যার সমাধান করা যায়, সেই সাথে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা যায়। মানুষের বর্তমান জীবন ব্যবস্থা খুবই জটিল্য রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিন নতুন নতুন চিন্ত্ নতুন স্বপ্ন, নতুন সাফল্য, নতুন স্বপ্ন দেখছে এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জীবনধারা পরিবর্তন ঘটছে।
একসময় কৃষিখাতকে নিয়ে একজন কৃষক একা একাই চিন্তা করতেন, ভাবতেন কিভাবে উন্নতি করা যায় কিন্তু আজ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে । বর্তমান ব্যবসায়ীরা, কৃষিবিদরা, ছাত্ররা, পেশাজীবীরা সবাই মিলে কৃষি খামার বা কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলার চিন্তা ভাবনা করছে। তারাও এখন কৃষি খাতকে লাভজনক খাত হিসাবে বিবেচনা করছে। ব্যবসায়ীরা এবং শিল্প উদ্যোক্তারা এই খাতে বিশাল অংকের অর্থ বিনিয়োগ করছে বড় ধরনের লাভের আশায়। অনেকেই জীবন জীবিকার পথ বেছে নিয়েছেন কৃষিখাতকে।
আরো পড়ুনঃ
মৎস্য চাষঃ মাছ চাষ এখন বিশাল বাণিজ্যিক লাভজনক খাত। পুকুর, ডোবা, জলাশয়, খাল, বিল ইত্যাদি জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এই মৎস্য চাষ জলজ চাষের প্রধান আকর্ষণ এবং এর তুলনা সামুদ্রিক প্রাণীর সাথে হতে পারে।
মাছ চাষের পদ্ধতিঃ মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতি ও উন্নতমানের টেকনিক ব্যবসায়ীরা, গবেষকরা অনুসরণ করছেন।
কৃষি খামার কি : কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
আপনি জেনে থাকবেন কৃষি খামার যাকে ইংরেজিতে এগ্রো ফার্ম বলে। যেখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে উদ্ভিদ ও প্রাণী উৎপাদন-সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা করা হয় এবং বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কারবার সম্প্রসারণ করা হয় তাকে কৃষি খামার বলে। কৃষি খামারে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য কারবার সম্প্রসারণ ও বিপণন করা হয়।এই ফার্মে বিভিন্ন রকমের ফসল উৎপাদন,পশুপালন, মৎস্য আবাদ, হাস মুরগির খামার, সবজির বাগান ইত্যাদি উৎপাদন করাকে কৃষি খামার বলে।
অন্য কথায়, কোন নির্দিষ্ট স্থানে শস্য উৎপাদন, ডেইরি ফার্ম, ফিশিং ফার্ম এবং অন্যান্য কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করা হয় সেই ব্যবস্থাকেই কৃষি খামার বলে। কৃষি খামারে বিভিন্ন ধরনের ফসলাদি উৎপাদন করা হয়। যেমন- ধান, গম, সব্জি, ফল ও ফুলের চাষ করা হয়। ডেইরি ফার্মে নানা জাতের গবাদি পশু যেমন-- গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি পালন করা হয়। পোল্ট্রি ফার্মে হাঁস--মুরগির চাষ করা হয়, মৎস্য ফার্মে পুকু্র, ডোবা, জলাশয় ইত্যাদি স্থানে মৎস্য চাষ ও প্রতিপালন করা হয়।
কৃষি খামার কত প্রকার ও কি কি: কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
কৃষি খাতের উপর নির্ভর করে কৃষি খামারকে ছয় প্রকারে ভাগ করা যায়। সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
হাঁস-মুরগির খামারঃ হাঁস-মুরগির খামার মূল উদ্দেশ্য হলো ডিম এবং গোশ্ত উৎপাদন করা। এই ফার্মে হাস মুরগি কবুতর কোয়েল পাখি ইত্যাদি পরিপালন করা হয়।
শস্য খামারঃ বাণিজ্যিকভাবে শস্য উৎপাদন জন্য নানারকমের সবজি শাক এবং ফসলাদি উৎপাদন করা হয় যে খামারে তাকে শস্য খামার বলে।
ডেইরি ফার্মঃ গবাদি পশু যেমন গরু ছাগল ভেড়া মহিষ ইত্যাদি যেসব খামারে পালন করা হয় তাকে ডেইরি ফার্ম বলে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মাংস এবং দুগ্ধ জাতীয় দ্রব্য উৎপাদন করা।
মৎস্য খামারঃ বিভিন্ন প্রকার ের মাছ বাণিজ্যিকভাবে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে খামারে চাষ করা হয়। এই মৎস্য খামারের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে মাছ উৎপাদন সংরক্ষণ প্রতিপালন এবং বাজারজাতকরণ।
নার্সারি বাগানঃ যেসব বাগানে প্রচুর পরিমাণ ফল গাছ ফুল গাছ ঔষধি গাছ এবং ফসলি গাছ ের চারা উৎপাদন পরিপালন ও বিপণন করা হয় সেই বাগানে কে নার্সারি বাগান বলে ।
ডেইরি ফার্মঃ বিভিন্ন জাতের গৃহপালিত পশু দুগ্ধ খামারে গরু মহিষ ছাগল ভেড়া ইত্যাদি উৎপাদন প্রতিপালন সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণ করা হয় তাকে ডেইরি ফার্ম বলে এই ফার্মে পশু মোটাতাজাকরণ এবং দুগ্ধ উৎপাদন করাই এর মূল লক্ষ্য।
হলে পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রয়োজন। নিম্নে সে ধাপ গুলি বর্ণনা করা হলোঃ
প্রারম্ভিক গবেষণাঃ প্রথমে আপনাকে জানতে হবে খামারের ধরন প্রকৃতি এবং সম্ভাব্যতা। যে বিষয়গুলি আপনি উৎপাদন করতে চান সেই দ্রব্যের বাজার মূল্য এর উপযোগিতা এবং প্রতিযোগিতা সম্বন্ধে এনালাইসিস করতে হবে।
আয়তনের দিক থেকে খামার দুই প্রকারঃ
পারিবারিক খামারঃ যেসব খামারে ব্যক্তি নিজে এবং তার পরিবারের লোকজন মিলে উৎপাদন সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণ করে সে সকল খামারকে পারিবারিক খামার বলে। এই জাতীয় খামারে পুজি বিনিয়োগ কম হয় এবং সম্ভবত কম।
বাণিজ্যিক খামারঃ যে খামারের মূল উদ্দেশ্য হলো বাণিজ্য করা এবং মুনাফা অর্জন করা সেই খামারকে খামার বলে। এই জাতীয় খামার বৃহৎ পরিসরে বিভিন্ন পণ্য কৃষি পণ্য পশু হাঁস মুরগি ইত্যাদি উৎপাদন সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণ করে অধিক পরিমাণ মুনাফা অর্জনই এর উদ্দেশ্য।
মালিকানা দিক থেকে খামার তিন প্রকারঃ
ব্যক্তি মালিকানাঃ একক ব্যক্তির অধীনে এবং তত্ত্বাবধানে যে খামার পরিচালনা করা হয় তাকে ব্যক্তি মালিকানা খামার বলে।
যৌথ মালিকানা খামারঃ এলাকার একাধিক ব্যক্তি একত্রিত হয়ে যৌথভাবে যে খামার পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করে তাকে যৌথ মালিকানা শেয়ার বলে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানা খামারঃ এ জাতীয় খামার সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় ও ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়।
কৃষি খামার করতে কি ধরনের প্রস্তুতি দরকার: কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
কৃষি খামার করতে হলে প্রথমে আপনাকে জায়গা সিলেকশন করতে হবে। আপনি কিসের খামার করবেন সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে। ধরুন আপনি ফার্ম সম্বন্ধে যদি নিজেই জানেন তাহলে নিজে খামার দেখাশোনা ও পরিচালনা করতে সমস্যা হবে না। আর যদি আপনি অভিজ্ঞ না হন তাহলে দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে হবে । তা না হলে আপনার খামার সফলতার মুখ দেখতে পাবে না। আপনার নিয়োগকৃত কর্মী যদি দক্ষ ও ভালো হয় তাহলে আপনি খামার করে লাভবান হতে পারবেন এবং আপনাকে লোকসানে গুনতে হবে না। এজন্য আপনাকে প্রয়োজনীয় মূলধন থাকতে হবে। কি পরিমাণ মূলধন লাগবে সেটা আপনার খামারের পরিধি অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। সাধারণত তিনটি উৎস থেকে আপনি মূলধন সংগ্রহ করতে পারেন।
- পারিবারিক উৎস থেকে
- ব্যাংকিং খাত ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানথেকে
- বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়-স্বজনদের থেকে ধার কর্জের মাধ্যমে
কৃষি খামার কিভাবে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা করা যায়: কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
টার্গেট নির্ধারণঃ আপনি যদি কৃষি খামার করতে চান তাহলে আপনাকে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি টার্গেট নির্ধারণ করা জরুরী। এটি উৎপাদন বৃদ্ধি বিপণন এবং দীর্ঘস্থায়ী চাষ আবাদের ব্যবস্থা করা।
বাজেট প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণঃ যেকোনো কৃষি খামার করতে গেলে আপনাকে প্রয়োজনীয় জমি যন্ত্রপাতি জ সার বীজ ও শেষের ব্যবস্থা করা এবং অন্যান্য ব্যয় বিস্তারিতভাবে তালিকা প্রণয়ন করুন। আর আর এর ভিত্তিতেই একটি বাজেট প্রনয়ণ করতে হবে।
বাজার ও বিপণন কৌশল ঃ আপনার উৎপাদিত যে দ্রব্য সামগ্রী কোথায় এবং কিভাবে বাজারজাত করবেন সে সকল পরিকল্পনা করুন লোকাল মার্কেট পাইকারি মার্কেট অনলাইন প্লাটফর্ম এবং এক্সপোর্ট মার্কেটের সুযোগ গুলি বিবেচনায় রাখুন।
মান নিয়ন্ত্রণঃ আপনার কৃষি ফার্মের উৎপাদিত ফিনিশড এর মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করুন এবং পন্যের গুণগত বিষয়গুলি বিবেচনায় রাখুন।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাঃ কৃষি খামার করতে হলে অনেক ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়। আমাদের দেশের খামারিরা প্রতিনিয়ত প্রতিনিয়ত প্রতিনিয়ত এই ঝুঁকি মোকাবেলা করছেন সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারলে ঝুঁকি কমানো যায় এবং মুনাফার পরিমাণ বাড়ানো যায়।
কৃষি খামারে কি ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়ঃ কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
কৃষি খামারে মডার্ন টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন এবং গুণগত মান উন্নয়ন করতে বড় বড় ভূমিকা রাখতে পারে। নিচে আপনাদের অবগতির জন্য বিভিন্ন রকমের মডার্ন কৃষি যন্ত্রপাতির নাম উল্লেখ করা হলো
ট্রাক্টরঃ ট্রাক্টর মডার্ন কৃষি যন্ত্রপাতির এক গুরুত্বপূর্ণ মেশিন। এর মাধ্যমে ফসলি জমির চাষ করা, শস্য কাটা, উৎপাদিত ফসল মাড়াই করা এবং খামারের অন্যান্য কাজে ট্রাক্টর ব্যবহৃত হয়।
হারভেস্টারঃ হার ভে স্টার হল মডার্ন টেকনোলজি এক অন্যতম যন্ত্র। এর মাধ্যমে ধান গম উট ও বার্লি সহ বিভিন্ন শস্য কাটা সহজ হয়। হারভেস্টার হল কম্বাইন যন্ত্র এবং একটি ঘর নিয়ে গঠিত। এই মেশিনটি ফসল কাটার জন্য দরকারি সময় অসমকে কমাতে সাহায্য করে এই এবং কৃষি শিল্পে বড় ধরনের বিবর্তন এনেছে। অধিক শস্য উৎপাদনে এই মেশিনটি বিশেষ দক্ষতা এবং খরচের সাশ্রয়ীর ভূমিকা পালন করে।
স্প্রে মেশিনঃ স্প্রে মেশিন হল আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির মধ্যে অন্যতম। আসলে কীটনাশক হারবি সাইড এবং পানীয় সার স্প্রে করতে ব্যবহৃত হয় সাধারণত বড় সাইজের কৃষি কাজের ব্যবহার করা যায়।
প্লান্টারঃ কৃষি খামারে দুঃখ এবং উন্নত পদ্ধতিতে বীজ রোপনের জন্য যে যন্ত্র ব্যবহৃত হয় তার নাম প্লান্টার। একটি প্লান্টের মেশিন আধুনিক কৃষি খামারে সশালিত যান যা সারিবদ্ধ ভাবে এবং সজ্জিত করে বীজ গোপন করা হয়। এই মেশিন ব্যবহারের ফলে সর্ষের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং শ্রমিকের খরচ কমানো সহজ হয় ।
থ্রেসারঃ শস্য ক্ষেতের ডালপালা আগাছা ভুষি থেকে দানা পৃথক করতে থ্রেসার মেশিন ব্যবহার করা হয়।এটি ফসলের আবর্জনা ভুসি থেকে শস্যদানা পৃথক করতে সাহায্য করে এবং কম্বাইন ও পরিবারের সাথে একত্রে ব্যবহৃত হয় রেসার একটি ক্ষমতাশালী যন্ত্র যা দক্ষতা সাথে নানা ধরনের শস্য এবং শস্য বীজ সংগ্রহ করতে হয়।
বেলারঃ বেলার একটি মডার্ন মেশিন যা মালামাল পরিবহনের জন্য এবং সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত হয় এটি শস্যের সংরক্ষণ এবং পরিবহনের বহুমুখী হাতিয়ার যা উন্নত পদ্ধতিতে রক্ষণাবেক্ষণ সহজ করা সহজ।
রিপারঃ রিপার একটি আধুনিক যন্ত্র যা বিভিন্ন টুকরো ফসল কাটা এবং সহজে ঝুড়িতে একত্রিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই মেশিন চাকা মাউন্ট করা যন্ত্র যার সাথে রিল ও কাচতে বার লাগানো থাকে এবং কোন একক মানুষ দ্বারা পরিচালিত হয়।
ফর্কলিফটঃ এই মেশিনটি গোডাউন এবং অন্যান্য সুবিধা দিয়ে থাকে। যেমন ফসলের সাইলো শসাগার এবং বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর সংরক্ষণ করা প্রয়োজন হয় সেখানে ভারী বোঝা বহন করা এবং করতে ব্যবহৃত হয় এই মেশিনটি শিল্প ট্রাক এর মত লম্বা বহু আছে এবং সম্প্রসারিত প্ল্যাটফর্ম আছে যা পরিচালনা করতে বাড়ানো কমানো যায়।
ব্যাচ ড্রায়ারঃ ব্যাস ড্রায়ার হলো একটি আধুনিক মেশিন যা ধান চাল গম ভুট্টা ইত্যাদি ফসল শুকানোর কাজে। ব্যবহৃত হয় এটি ফসলের আর্দ্রতা এবং নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ব্যবহার করা হয় যেমন ফার্মে প্রক্রিয়াকরণ প্লান্টে।
মাড়াই কলঃ মাড়াই কল একটা আধুনিক যন্ত্র যা ধান গম ভুট্টা ওঠসহ অন্যান্য ফসল এবং তাদের তুর ও খড় থেকে আলাদা করতে সাহায্য করে মেশিনটি কৃষি কর্মের অপরিহার্য অঙ্গ। এই মেশিন বিভিন্ন আকার এবং ধারণ ক্ষমতায় পাওয়া যায়।
একটা আদর্শ কৃষি খামারের বৈশিষ্ট্য: কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
আদর্শ কৃষি খামার এর বৈশিষ্ট্য আলোচনা করতে গেলে প্রথমে আমাদের জানতে হবে কৃষি খামার কি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে পরিমাণ ভূমিতে একটি খামার এর একর প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়া যায় এবং উৎপাদিত শস্যের আয় থেকে কৃষক ও তার পরিবার সচ্ছলভাবে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করতে পারে জীবনের উন্নতি ঘটাতে পারে সে পরিমাণ জমি ও ব্যবস্থাপনাকে আদর্শ কৃষি খামার বলে।
একটি আদর্শ কৃষি খামারের বৈশিষ্ট্য সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
ভূমির পরিমাপঃ কি পরিমাণ আয়তনের জমি লাগবে সেগুলি নির্ধারণ করা একটি আদর্শ খামারের বৈশিষ্ট্য ক্ষুদ্র কিংবা অল্প জমি দিয়ে কোন খামার তৈরি করা যায় না।
ভূমির বৈশিষ্ট্যঃ প্রাচীন ও পুরাতন চাষাবাদ পদ্ধতি পরিবর্তে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির সুযোগ, ভূমির জৈবিক শক্তি থাকা, অধিক শস্য উৎপাদনের ক্ষমতা থাকা, ফসল বহুমুখীকরণ এর সুযোগ বিদ্যমান থাকা, জমির আয়তন পর্যাপ্ত হওয়া, উর্বরা ক্ষমতা পর্যাপ্ত থাকা কিংবা আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সুযোগ থাকা একটি আদর্শ কৃষি খামারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
শস্যের প্রকৃতিঃ জমিতে ফসল উৎপাদনের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে কৃষি খামারটি কতটুকু সাফল্য অর্জন করবে। বিভিন্ন ধরনের ফসল যেমন ধান গম ডাল পাট শাকসবজি ফল ফুল ইত্যাদি উৎপাদনে সহজ কিনা।
আধুনিক যন্ত্রপাতিঃ আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি যেমন ট্রাক্টর পাওয়ার টিলার ইত্যাদি ব্যবহার করার মত উপযোগী থাকতে হবে।
জলবায়ুঃ জমিতে জলবায়ু অনুকূল কেনা এবং প্রতিকূলতা কাটিয়ে কিভাবে ফসল অধিক মাত্র উৎপাদন করা যায় এ ধরনের পরিবেশ থাকাই আদর্শ খামারে বৈশিষ্ট্য। প্রত্যেক দেশে একটি ভালো কৃষি খামার নির্ভর করে ওই দেশের জলবায়ু উৎপাদন কলা কৌশল ভৌগোলিক অবস্থা শেষ ব্যবস্থা ইত্যাদি সুবিধার উপর।
কোন ধরনের কৃষি ব্যবসা করবেন ঃ কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
আপনি যদি কৃষি ব্যবসা করতে চান, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর চিন্তা করা দরকার, যেমন জমির পরিমাণ, বিনিয়োগ, বাজার চাহিদা, এবং আপনার আগ্রহ। নিচে কিছু লাভজনক কৃষি ব্যবসার আইডিয়া দেওয়া হলো:
আরো পড়ুনঃ
১. ফসল চাষ: ফসলের মধ্যে আপনি ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা ও ডাল চাষ করতে পারেন, এতে লাভবান হওয়া যাবে বেশি। উচ্চমূল্যের সবজি যেমনঃ টমেটো, ক্যাপসিকাম, শসা, ব্রোকলি ইত্যাদি সবজি চাষ করা যায়। এগুলো অর্গানিক চাষ (কেমিক্যাল মুক্ত সবজি ও ফল)।
২. ফল চাষঃ আম, লিচু, কলা, পেয়ারা, ড্রাগন ফল ইত্যাদি চাষ করা যায়। বারোমাসি ফল যেমনঃ তরমুজ, পেঁপে ইত্যাদি লাভজনক ফল চাষ।
৩. পশুপালন ও ডেইরি ফার্মঃ গরু ও ছাগল পালন (গরুর দুধ, মাংস উৎপাদন), হাঁস-মুরগির খামার। যেমনঃ ডিম ও মুরগির মাংস খুবই লাভজনক ব্যবসা।
৪. মৎস্য চাষঃ পুকুরে মাছ চাষ যেমনঃ তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, রুই-কাতলা ইত্যাদি মাসের চাষ খুবই সমৃদ্ধশালী ব্যবসা যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ঝিনুক ও মুক্তা চাষও লাভজনক ব্যবসা ।
৫. কৃষিভিত্তিক প্রক্রিয়াজাতকরণঃ মৌচাষ ও মধু উৎপাদন কৃষিভিত্তিক প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবসা যা। এছাড়াও শুকনো মরিচ, আদা, হলুদ ও মসলা প্যাকেজিং বিভিন্ন লাভজন ক কৃষিভিত্তিক ব্যবসার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
৬. কৃষি পণ্য সংরক্ষণ ও রফতানিঃ কৃষি পণ্য ক্রয় সংরক্ষণ মজুতকরণ বিপনন এবং রপ্তানিকরণ এর মাধ্যমে কৃষি ব্যবসা সম্প্রসারণ করা সম্ভব।
ছাদ কৃষি ব্যবসায় কি লাভজনক ঃ কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায়
ছাদ কৃষি ব্যবসা লাভজনক হতে পারে যদি এটি সঠিক পরিকল্পনা, যত্ন এবং বাজারজাতকরণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর কিছু মূল কারণ হলোঃ
লাভজনক দিকসমূহ: ১। কম খরচে উৎপাদন – ছাদ কৃষিতে প্রচলিত কৃষির তুলনায় কম জমি লাগে এবং কম খরচে সবজি, ফল, মশলা ও অন্যান্য গাছ উৎপাদন করা যায়।
২। অর্গানিক পণ্য হিসেবে উচ্চমূল্য – অর্গানিক ও টক্সিন-মুক্ত ফসলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, যা বাজারে ভালো দামে বিক্রি করা যায়।
৩। নিজের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা – উৎপাদিত শাকসবজি ও ফলমূল পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়।
৪। শহরের ক্রমবর্ধমান চাহিদা – শহরের মানুষ টাটকা ও স্বাস্থ্যকর সবজির জন্য ছাদ কৃষি থেকে পণ্য কিনতে আগ্রহী। ফলে দিনে দিনে ছাদ কৃষি পণ্য এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৫। বাগান কেন্দ্রিক ব্যবসার সুযোগ – ছাদ বাগানের পাশাপাশি নার্সারি, বীজ বিক্রি, সার, গাইডলাইন বা প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি করা যায়।
কীভাবে লাভবান হওয়া যায়
১। সঠিক ফসল নির্বাচন করুন – উচ্চমূল্যের ফসল যেমন চেরি টমেটো, লেটুস, স্ট্রবেরি, ক্যাপসিকাম, মাইক্রোগ্রীনস ইত্যাদি বেছে নিন।
২। অর্গানিক সার ও কম্পোস্ট ব্যবহার করুন – কেমিক্যাল মুক্ত উৎপাদন করলে উচ্চমূল্যে বিক্রয় সম্ভব।
৩। বাজার গবেষণা করুন – স্থানীয় সুপারশপ, হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও অনলাইন মাধ্যমে বিক্রির পরিকল্পনা করুন।
৪। সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করুন – ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ব্যবহার করে আপনার পণ্য ও পরিষেবা সম্পর্কে প্রচার করুন।
৫। সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করুন – অতিরিক্ত উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণ বা প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রির সুযোগ তৈরি করুন ।যেমন: শুকনো মরিচ, ধনেপাতা পাউডার, আচার ইত্যাদি।
প্রাথমিক বিনিয়োগ কেমন হতে পারেঃ সাধারণ ছাদ বাগান – ২০,০০০---৫০,০০০ টাকা
বাণিজ্যিক ছাদ কৃষি (হাইড্রোপনিক বা আধুনিক পদ্ধতি) – ১-২ লাখ টাকা
লাভের পরিমাণ – সঠিক পরিকল্পনা করলে প্রতি মাসে ১০,০০০---৫০,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।
আপনি যদি আগ্রহী হন, তাহলে ছোট পরিসরে শুরু করে ধীরে ধীরে ব্যবসা বড় করতে পারেন।
আমাদের শেষ বক্তব্য
কৃষি এখন আর শুধু জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম নয়, বরং সঠিক ব্যবস্থাপনায় এটি একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তি, স্মার্ট মার্কেটিং ও সরকারী সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। সফল হতে হলে ধৈর্য, পরিকল্পনা ও নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রম প্রয়োজন।
কৃষি খামার করে কিভাবে লাখ টাকা আয় করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা এর থেকে অনেক বিষয় জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হতে পেরেছেন। এই ধরনের আরো বিষয় জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং নতুন নতুন আর্টিকেল পাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url