সকল ধর্মেই সুদ নিষিদ্ধ এবং সুদের অভিশাপ থেকে বাঁচার উপায়

সকল ধর্মেই সুদ নিষিদ্ধ এবং সুদের অভিশাপ থেকে বাঁচার উপায়


সুদ শব্দটি ঘৃণিত এবং নিকৃষ্ট শব্দ। আপনি ভাবছেন সুদ কেন নিষিদ্ধ এবং নিকৃষ্ট। সে বিষয়টি এই নিবন্ধে আপনাদের সামনে আমি বিস্তারিত আলোচনা করব।

 আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেলটি পাঠ করুন। তাহলে  সুদ কেন নিষিদ্ধ কেন ঘৃণিত এবং কেন অভিশপ্ত সে বিষয়গুলি আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন। আপনি জানতে পারবেন বিভিন্ন ধর্মে সুদকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং নিরুতসাহিত করা হয়েছে ।

পেজ সূচিপত্র: সকল ধর্মেই সুদ নিষিদ্ধ এবং সুদের অভিশাপ থেকে বাঁচার উপায়

সকল ধর্মেই সুদ নিষিদ্ধ এবং সুদের অভিশাপ থেকে বাঁচার উপায়
সুদ বা  রিবা কি ? সুদ বা রিবা কত প্রকার ও কি কি
সুদ কখন,কেন  এবং  কিভাবে হয়
সুদ নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে মহাগ্রন্থ আল কুরআন 
সুদ নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে আল হাদিস
ইহুদি ধর্মে সুদ নিষিদ্ধ
খ্রিস্ট ধর্মে  সুদ নিষিদ্ধ
হিন্দু ধর্মে সুদ নিষিদ্ধ
অন্যান্য দর্শন ও সাহিত্যে সুদ নিষিদ্ধ
সুদ ও মুনাফার মধ্যে পার্থক্য
ইসলামী ব্যাংক ও প্রচলিত ব্যাংকের পার্থক্য
সুদী ব্যবস্থার অবসান কেন দরকার
আমাদের শেষ কথা

সুদ বা  রিবা কি ? সুদ বা রিবা কত প্রকার ও কি কি

সুদ বাংলা শব্দ। আরবিতে রিবা বলে। রিবা অর্থ যোগ, বৃদ্ধি, অতিরিক্ত, সম্প্রসারণ, প্রবৃদ্ধি, বিকাশ ইত্যাদি। সুদ বলতে বোঝায় মূলধন বৃদ্ধি হওয়া এবং আসল বা মুল থেকে বেড়ে যাওয়া। একই জাতীয় সম্পদ বা অর্থ ঋণ বা ধার দিয়ে সময়ের ব্যবধানে বিনাশ্রমে ঋণগ্রহীতা নিকট থেকে অতিরিক্ত আদায় করলে এই অতিরিক্ত অংশ হল সুদ। সুতরাং সময়ের প্রেক্ষিতে অর্থের জন্ম দেয় তাই সুদ। 
আরো পড়ুনঃ
কুরআনের পরিভাষায় যে কোন অবৈধ উপায়ে বা কোন প্রকার সুবিধা ভোগের মাধ্যমে মূলধনের পরিমাণ বা আকার বৃদ্ধি করার নামই রিবা বা সুদ ।
ইসলামের আবির্ভাব এর পূর্বে আরবে প্রধানত দুই ধরনের সুদ প্রচলিত ছিল ১। রিবা নাফিয়া২। রিবা আল ফদল। কুরআনের আয়াত দ্বারা বিভানাসিয়া এবং হাদিস যারা রিবা ফজলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুদের শর্তাবলীঃ ১। ঋণ হওয়া ২। Fungible goods হওয়া ৩। ঋণের শর্ত হওয়া ৪। অতিরিক্ত নেওয়া ৫। লেনদেন হওয়া।

ক) রিবা আন নাসিয়াহ 

রিবা অর্থ সুদ আর নাসিয়াহ অর্থ সময়, মেয়াদ, দেরি করা, স্থগিত করা, বিলম্বিত করা, প্রতীক্ষা করা ইত্যাদি। রিবা আন নাসিয়া অর্থ মেয়াদী ঋণের সুদ। ঋণ দাতা যখন মূলধনের উপর নির্দিষ্ট সময় পর ফেরত দেয়ার শর্তে নির্দিষ্ট হারে অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে ঋণ গ্রহীতাকে  ঋণ পরিশোধের অবকাশ দেয় তখন সেই অতিরিক্ত অংশকে বলা হয় রিবা নাসিয়াহ।  রিবা নাসিয়া নগদ অর্থ  কিংবা পণ্য উভয়ই হতে পারে। 
রিবা আন নাসিয়া সরল সুদ এবং চক্রবৃদ্ধি সুদ দুটোকেই বুঝায়। এই সুদের বিবরণ দিতে গিয়ে কাতাদাহ বলেছেন, ইসলামের আগমনের পূর্বে আরবের কোন লোক ধারে কোন পণ্য বিক্রি করলে সে ক্রেতাকে এর দাম পরিশোধের জন্য সময় নির্ধারণ করে দিত। ক্রেতা যদি উক্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাম পরিশোধে করতে অপারগ হতো তাহলে বিক্রেতা তার প্রাপ্য পরিমাণ বাড়িয়ে দিত এবং  তা পরিশোধের সময় সীমাও বর্ধিত করে দিত।
মুজাহিদ বলেছেন, ইসলামের পূর্বে কোন ব্যক্তি অন্য কারো কাছে ঋণী থাকলে সে উক্ত ঋণের উপর বাড়তি প্রদানের শর্তে ঋণ দাতাকে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে দিতে বলতো,  ঋণদাতা সে মোতাবেক ঋণ পরিশোধের সময়সীমা পিছিয়ে দিত।
আবু বকর আল জাসাস বলেন, ইসলামের পূর্ব যুগে সকলের জানা ছিল যে, সুদ হচ্ছে চুক্তি অনুযায়ী বর্ধিত করার শর্তে মুলতবীকৃত ঋণ।
ইমাম আল রাজি বলেছেন, নিশ্চয়ই ইসলামের পূর্বে রিবা নাসিয়াহ বহুল প্রচলিত ছিল। তখন কোন লোক কিছু সময়ের জন্য অন্য কোন লোককে ধার দিত এবং এর বিনিময়ে সে ঋণ গ্রহিতার নিকট থেকে প্রতিমাসের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আদায় করত। কিন্তু মূলধন বা প্রদত্ত ঋণের পরিমাণ সমানে থেকে যেত। ঋণ পরিশোধের সময় হলে ঋণদাতা তার অর্থ ফেরত চাইতো। ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে অসমর্থ  হলে ঋণদাতা ঋণের উপর বাড়তি অর্থ যোগ করে ঋণ পরিশোধের সময় বাড়িয়ে দিত। 
রিবা নাসিয়ার বৈশিষ্ট্য: 1. মূলধনের উপর অতিরিক্ত অর্থ যোগ করা 2. এই অতিরিক্ত অর্থের জন্য কোন সময় নির্ধারণ করা. 3. সুদের   সুদের শর্তে  চুক্তিবদ্ধ হওয়া।

খ) রিবা আল ফদল


ফদল অর্থ অতিরিক্ত। সম জাতীয় জিনিস বিনিময়ের ক্ষেত্রে ওজনে বা পরিমাণে কম বেশি করলে রিবা ফদলের উদ্ভব হয়। একই জাতীয় মালের পারস্পরিক বিনিময় বা বেচাকেনা্র সময় একপক্ষ অপরপক্ষকে অতিরিক্ত অংশ প্রদান করলে সেটাকেই রিবা আল ফদল বলে ।
কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রব্যের সাথে ওই একই দ্রব্যের কম বা বেশি পরিমাণে বিনিময় বা কোন বিক্রয় করা হলে রিবা ফদল হয়। যেমনঃ  সোনার বদলে সোনা, রুপার বদলে রুপা, গমের বদলে গম, জবের বদলে জব, খেজুরের বদলে খেজুর বিনিময় করা।
 এই বিনিময়ের মধ্যে সুদের উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। কারণ এতে দ্রব্যের গুণগতমান ও পরিমাণগত মানের তারতম্যের কারণে ক্রেতা বা বিক্রেতা একজন অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত এবং লাভবান হবেই.।  আধুনিক কালের বিনিময় বা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে খেয়াল রাখা দরকার ।

সুদ কখন, কেন  এবং  কিভাবে হয়


ইহুদিদের দ্বারা প্রবর্তিত ও নিয়ন্ত্রিত সুদি অর্থ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা গোটা দুনিয়াকে গ্রাস করেছে। এই সুদি ব্যবস্থা ঋনদানের মাধ্যমে প্রতারণা, জালিয়াতি ও অর্থনৈতিক শোষণের হাতিয়ার সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে। ফলে বিশ্বের মানুষ দারিদ্রজনিত দাসত্বের শিকলে বন্দী। বিশ্বজুড়ে আর্থ- সামাজিক নির্যাতন ও নিপীড়নের অন্যতম কারণ রিবা বা সুদ। রিবা বা সুদে ৭০ টি শাখা প্রশাখা রয়েছে যার সর্বনিম্ন শাখা হলো নিজের মাকে বিয়ে করা। আর প্রথম প্রকার পাপ হলো আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে যিহাদ ঘোষণা করা, আরও ৬৮ টি শাখা রয়েছে। 
বিভিন্ন প্রতারণা ও ছলচাতুরির মাধ্যমে সম্পদ হাতিয়ে নেওয়া এক ধরনের সুদ। ফটকা ব্যবসা অনুমান নির্ভর ব্যবসায় কর্মকান্ড এবং লেনদেন, ওজনে ও মাপে কম দেয়া  নেয়ার সময় বেশি নেওয়া ইত্যাদি সফল কর্মকাণ্ডই সুদ।  বিনাশ্রমে অর্থ সম্পদ অর্জন করাকেও সুদ বলা হয়। কোন পণ্যের উপর অস্বাভাবিক লাভ করাও জুলুম যা সুদেরই নামান্তর। জোরপূর্বক চাঁদাবাজি করে জুলুম করা এক প্রকার সুদ। লটারির টিকিট বিক্রি করে বিনাশ্রমে অর্জিত অর্থ সুদ। কালোবাজা্রী, মজুদদারী, কৃত্রিমভাবে মূল্য বাড়িয়ে নিলামে বিক্রি করা, অনুমান নির্ভর ফটকা ব্যবসা, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ সুদের মধ্যে পড়ে।

সুদ নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে মহাগ্রন্থ আল কুরআন 

মহাগ্রন্থ আল কুরআনে সুদ গ্রহণ ও প্রদানের ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কুরআনে সুদকে হারাম এবং তা অন্যায় ও জুলুম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত উল্লেখ করা হলোঃ
১। সুদ ব্যবসার বিপরীত দানশীলতা
আল-রুম ৩০:৩৯
"তোমরা যা সুদ হিসেবে দিয়ে থাক, যাতে মানুষের সম্পদে বৃদ্ধি ঘটে, তা আল্লাহর দৃষ্টিতে বৃদ্ধি পায় না। আর যা তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান কর, তা-ই (আসল) বৃদ্ধি লাভ করে।"
২। সুদ গ্রহণকারীদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি
আন-নিসা ৪:১৬১
"এবং তারা সুদ গ্রহণ করতো, অথচ তাদের তা থেকে নিষেধ করা হয়েছিল এবং তারা অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ আত্মসাৎ করতো। তাদের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী, তাদের জন্য আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছি।"
৩।  সুদ দানকারী ও গ্রহীতার শাস্তি
আল-ইমরান ৩:১৩০
"হে মুমিনগণ! তোমরা সুদ খেয়ো না, দ্বিগুণ-চতুর্গুণ করে; এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।"
৪। সুদ গ্রহণকারীদের পরিণতি
আল-বাকারা ২:২৭৫
"যারা সুদ খায়, তারা সেই ব্যক্তির মতো, যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল করে দিয়েছে। তারা বলে, 'ব্যবসা তো সুদের মতোই!' অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। যে ব্যক্তি তার রবের কাছ থেকে উপদেশ পেয়ে সুদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকে, তার যা অতীত, তা ক্ষমা করা হবে। তবে যারা পুনরায় এ কাজে লিপ্ত হয়, তারা জাহান্নামের অধিবাসী হবে এবং সেখানে চিরস্থায়ী থাকবে।"
৫। সুদ হারাম হওয়ার ঘোষণা
আল-বাকারা ২:২৭৮-২৭৯
"হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে অংশ বাকি আছে তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা সত্যিকারের মুমিন হও। আর যদি তোমরা তা না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই থাকবে; তোমরা কাউকে অত্যাচার করো না এবং তোমাদের প্রতিও অত্যাচার করা হবে না।"
আল কুরআনের আলোকে সুদ স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ এবং হারাম। এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক শোষণের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ইসলামে সুদভিত্তিক লেনদেনের পরিবর্তে ব্যবসা-বাণিজ্য, পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা ও ইনসাফপূর্ণ লেনদেনকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

সুদ নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে আল হাদিস

হাদিসের মাধ্যমে সত্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিচে কিছু হাদিসের বর্ণনা দেওয়া হলোঃ

১। যাবির রাঃ এবং আব্দুল্লাহ ইবন মাসুদ রাঃ  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল সঃ সুদ দাতা, সুদ গ্রহীতা, সুদের লেখক এবং সুদের সাক্ষীদের উপর  করেছেন। অভিসম্পাত। (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)

২। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, সুদের সত্তর শাখা রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ছোট সকাল হচ্ছে কোন ব্যক্তি তার মাকে বিয়ে করার সময় করল। আর প্রথম ধরনের পাপ হলো আল্লাহ তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। (ইবন মাজাহ, বায়হাকী)

৩। আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছে্ন, মিরাজ রজনীতে আমি সপ্তম আকাশে পৌঁছে যখন উপরের দিকে তাকালাম তখন বজ্রধ্বনি বিদ্যুৎ ও প্রকট শব্দ শুনতে পেলাম। অতঃপর আমি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে কাছে এলাম যাদের পেট ছিল একটি ঘরের ন্যায় বিস্তৃত। তাদের পেট ছিল সরপে ভরপুর। সাপগুলো বাহির হইতে থেকে দেখা যাচ্ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিব্রাই্‌ এরা কারা? তিনি বললেন, তারা হলো সুদখোর। (মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ)

৪। আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহতা'লা চার ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তাদেরকে জান্নাতের কোন নিয়ামত ভোগ করার সুযোগ দিবেন না। তারা হলো মধ্যপনকারী, সুদখোর, অন্যয়ভাবে এতিমের মাল ভক্ষণকারী এবং পিতা মাতার অবাধ্য সন্তান। (মুস্তাদারাক হাকিম)

৫। আব্দুল্লাহ ইবনে হানজালা রাঃ থেকে বর্ণিত, রসুল সঃ বলেন, মানুষ সুদ বাবদ যদি এক দিরহামও গ্রহণ করে তাহলে তার অপরাধ ইসলাম গ্রহণের পর মুসলিম থাকা অবস্থায় ৩৬ বার ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার চেয়েও মারাত্মক।(মিশকাত, মুসনাদে আহমদ )

6. Avey ûivqiv (ivt) †_‡K ewY©Z, imyj (mt) e‡j‡Qb, ¶wZKi mvZwU welq †_‡K †Zvgiv ci‡nR _vK‡e| mvnvevM ej‡jb, †n আল্লাহর imyj (mt), †m mvZwU welq wK ? Rev‡e wZwb ej‡jb, (1) Avj­vni mv‡_ KvD‡K kixK Kiv (2) hv`y we`¨v wk¶v I cÖ`k©b (3) KvD‡K nZ¨v Kiv (4) my` LvIqv (5) GwZ‡gi gvj f¶b Kiv (6) ag© hy× †_‡K cjvqb Kiv (7) †Kvb ¯^Zx-mvaex igbx‡K Acev` †`qv| (eyLvix, gymwjg, Avey `vD`, bvmvC)

7. Avey ûivqiv (ivt) †_‡K ewY©Z, imyj (mt) e‡j‡Q্‌,my`†Lvi Rvbœv‡Z cÖ‡ek Ki‡Z cvi‡e bv| (gyস্তা`vwiK nvKxg)|

8. Avey ûivqiv (ivt) †_‡K ewY©Z, imyj (mt) e‡j‡Qb, Ggb GK hyM Avm‡e hLb †Kvb gvbylB my` e¨ZxZ evKx _vK‡e bv| †KD hw` my` bv Lvq Kg c‡¶ my‡`i †auvqv ev aywj Kbv n‡jI Zv‡K ¯úk© Ki‡e| (Avey `vD`, Be‡b gvRvn)|

9. nhiZ Avey †Rvnvqdv (ivt) Gi cyÎ eY©bv K‡ib, Avwg Avgvi wcZv‡K †`Ljvg wZwb GKwU µxZ`vm µq K‡i G‡b‡Qb| µxZ`vmwUi i³ †gv¶b Kv‡h© `¶Zv wQj| (Zvi Kv‡Q wk½v jvMv‡bvi hš¿cvwZI wQj| Avgvi AveŸv †m ¸wj †f‡½ †dj‡jb)| Avwg Avgvi wcZv‡K Hme fv½vi Kvib wR‡Ám Kijvg| wZwb ej‡jb, imyj (mvt) wb‡P ewb©Z wZb cÖKv‡ii A_© DcvR©b wbwl× K‡i‡Qb (1) gvbyy‡li kix‡i m~P we× K‡i wPÎ AsKbKvix I e¨emvqx (2) ¯^xq kix‡i H wPΩ MÖnbKvix (3) my` MÖnxZv (4) my` `vZv| (eyLvix)

10. Rvwei Be‡b Avãyj­vn (ivt) e‡j‡Qb, imyjyj­vn (mt) we`vq n‡Ri fvl‡b e‡j‡Qb, Rvwnjx hy‡Mi i` iwnZ Kiv nj| me©cÖ_g Avwg Avgvi Kvwejvi সুদের `vwe A_©vr PvPv AveŸv‡mi my` gvd K‡i w`jvg| myZivs mKj my`B AvR iwnZ Kiv nলো (gymwjg)

mকল a‡g©B my`‡K wbwl× Kiv n‡h‡Q| my‡`i Aïf cwibwZ wewfbœ a‡g© gZev‡` N„wbZ n‡q Avm‡Q| KziAvb bvwh‡ji cy‡e© Ab¨vb¨ Avmgvbx wKZv‡e  my` wbwl× wQj|

Bû`x a‡g© my` নিষিদ্ধঃ

ইহুদি ধর্মে সুদ (ribbit) গ্রহণ করা নিষিদ্ধ, তবে এটি নির্দিষ্ট শর্তের ওপর নির্ভর করে। তানাখ (হিব্রু বাইবেল) এবং তালমুদ-এ সুদ সংক্রান্ত বেশ কিছু বিধান রয়েছে।ইহুদি ধর্মে সুদ সংক্রান্ত বিধানঃ 

1. নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে সুদ নিষিদ্ধ:

ওল্ড টেস্টামেন্ট বা তোরাহ-এর বিভিন্ন অংশে বলা হয়েছে যে, ইহুদিরা নিজেদের সম্প্রদায়ের সদস্যদের কাছ থেকে সুদ নিতে পারবে না।

উদাহরণ: যাত্রাপুস্তক (Exodus) 22:25: "যদি তুমি আমার লোকদের, যারা দরিদ্র, তাদের টাকা ধার দাও, তবে তোমরা তাদের কাছ থেকে সুদ নিও না।"

লেবীয় পুস্তক (Leviticus) 25:36-37: "তোমার ভাইয়ের কাছ থেকে সুদ নিও না, বরং তাকে সাহায্য কর যেন সে তোমার সঙ্গে বাস করতে পারে।"

দ্বিতীয় বিবরণ (Deuteronomy) 23:19-20: "তোমার ভাইয়ের কাছ থেকে সুদ নিও না, তবে বিদেশিদের কাছ থেকে নিতে পারো।"

2. অইহুদি বা বহিরাগতদের থেকে সুদ নেওয়া অনুমোদিত:

তোরাহ অনুযায়ী, ইহুদিরা অইহুদি বা বহিরাগতদের (non-Jews) থেকে সুদ নিতে পারে। তবে এর পেছনে যুক্তি হলো, ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা।

3. ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সুদ কিছু ক্ষেত্রে অনুমোদিত:

পরবর্তীকালে ইহুদি আইনবিদরা (Rabbinic scholars) কিছু শর্তসাপেক্ষে ব্যবসায়িক লেনদেনে সুদের অনুমতি দিয়েছেন, বিশেষ করে যদি তা সরাসরি কারও ওপর অন্যায় চাপ তৈরি না করে।

L„ó a‡g© my` নিষিদ্ধ

খ্রিস্টধর্মে সুদের (interest বা usury) বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, বিশেষ করে বাইবেলের বিভিন্ন অংশে সুদগ্রহণের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

বাইবেলে সুদ সম্পর্কে উক্তি:

1. পুরাতন নিয়ম (Old Testament)

লেভিটিকাস ২৫:৩৫-৩৭ – "যদি তোমার ভাই দরিদ্র হয়ে পড়ে এবং সে তোমার সহায়তার উপর নির্ভর করে, তবে তাকে সাহায্য করো... তার কাছ থেকে সুদ বা মুনাফা নিও না।"

নেহেমিয়া ৫:৭-১০ – নেহেমিয়া ধনীদের সুদ নেওয়ার কারণে সমালোচনা করেন এবং সুদ ছাড়তে বলেন।

গীতসংহিতা ১৫:৫ – "যে ব্যক্তি সুদে টাকা দেয় না, সে কখনও নড়বড়ে হবে না।"

2. নতুন নিয়ম (New Testament)

লূক ৬:৩৪-৩৫ – "যদি তোমরা তাদের ঋণ দাও যারা তোমাদের ফিরিয়ে দেবে, তাহলে তোমাদের কী মাহাত্ম্য? বরং শত্রুদের ভালোবাসো এবং ঋণ দাও, কিছু ফেরত পাওয়ার আশা না রেখে।"

খ্রিস্টধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি:

প্রাচীনকালে ক্যাথলিক চার্চ সুদকে পাপ হিসেবে বিবেচনা করত এবং খ্রিস্টান সমাজে সুদ গ্রহণ নিষিদ্ধ ছিল। তবে রেনেসাঁ এবং আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে বিভিন্ন সময় নিয়ম শিথিল হয় এবং এখন অনেক খ্রিস্টান ব্যাংক সুদভিত্তিক কার্যক্রম চালায়।

আরো পড়ুনঃ

তবে, কিছু গোষ্ঠী (যেমন ক্যাথলিক চার্চের কিছু অংশ এবং নির্দিষ্ট ইভাঞ্জেলিকাল খ্রিস্টানরা) এখনও উচ্চ সুদকে নৈতিকভাবে ভুল মনে করে।

wn›`y a‡g© my` 

হিন্দু ধর্মে সুদ (ঋণের উপর অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া) সম্পর্কে কোনো সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে ধর্মগ্রন্থ ও শাস্ত্রে সুদের নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

হিন্দু শাস্ত্রে সুদ সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি:

1. মনুস্মৃতি – মনুস্মৃতিতে সুদের হার ও এর গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে ব্রাহ্মণদের জন্য সুদ নেওয়া উচিত নয়, তবে বৈশ্য ও ক্ষত্রিয়দের জন্য নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে এটি অনুমোদিত।

2. অর্থশাস্ত্র (কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র) – চাণক্যের অর্থশাস্ত্রে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং এটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে বিবেচিত হতো।

3. ধর্মশাস্ত্র – কিছু ধর্মগ্রন্থে সুদকে অনৈতিক বলা হয়েছে, বিশেষ করে অত্যধিক সুদের হারকে (যেমন মহাজনী সুদ) শোষণ হিসেবে দেখা হয়েছে।


হিন্দু ধর্মে সুদের সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে অযৌক্তিক ও শোষণমূলক সুদকে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়। বিভিন্ন শাস্ত্র ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে সুদের নৈতিকতা নির্ভর করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উপর।

Ab¨vb¨ `k©b I mvwn‡Z¨ my` wbwl× 

সুদ (ব্যক্তিগত ঋণের উপর অতিরিক্ত সুদ গ্রহণ) অনেক ধর্ম ও দর্শনশাস্ত্রে নৈতিকভাবে অনুচিত বা নিষিদ্ধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। শুধু ইসলাম নয়, খ্রিস্টধর্ম, ইহুদিধর্ম, হিন্দুধর্ম এবং বিভিন্ন প্রাচীন দার্শনিক ও সাহিত্যিক গ্রন্থেও সুদের বিরোধিতা করা হয়েছে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ দেওয়া হলো:

1. গ্রিক দর্শন

গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল সুদকে "অপ্রাকৃতিক" বলেছিলেন, কারণ অর্থের নিজস্ব কোনো উত্পাদন ক্ষমতা নেই। প্লেটোও সুদকে অশুভ বলে মনে করতেন।

2. প্রাচীন সাহিত্য ও নৈতিক দর্শন

শেক্সপিয়ারের "দ্য মার্চেন্ট অফ ভেনিস" নাটকে সুদের কুফল দেখানো হয়েছে।

চীনা ও বৌদ্ধ ধর্মেও লোভের বিরুদ্ধে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, যা সুদের সঙ্গে সম্পর্কিত।

অর্থাৎ, প্রায় সব প্রধান ধর্ম ও দর্শনেই সুদকে অন্যায় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, কারণ এটি ধনী-গরিবের বৈষম্য বৃদ্ধি করে এবং নৈতিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।

আমাদের শেষ বক্তব্য

আমি আপনাদের নিকট বিভিন্ন ধর্মে সুদ নিষিদ্ধের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। 

আপনি আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে হলে আমাদের এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আমরা নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ের উপর কন্টেন্ট প্রকাশ করে থাকে। তাই নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন তাহলে অনেক বিষয় জানতে পারবেন।  


 

 

 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url