সকল ধর্মেই সুদ নিষিদ্ধ এবং সুদের অভিশাপ থেকে বাঁচার উপায়
সকল ধর্মেই সুদ নিষিদ্ধ এবং সুদের অভিশাপ থেকে বাঁচার উপায়
সুদ শব্দটি ঘৃণিত এবং নিকৃষ্ট শব্দ। আপনি ভাবছেন সুদ কেন নিষিদ্ধ এবং নিকৃষ্ট। সে বিষয়টি এই নিবন্ধে আপনাদের সামনে আমি বিস্তারিত আলোচনা করব।
আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেলটি পাঠ করুন। তাহলে সুদ কেন নিষিদ্ধ কেন ঘৃণিত এবং কেন অভিশপ্ত সে বিষয়গুলি আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন। আপনি জানতে পারবেন বিভিন্ন ধর্মে সুদকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং নিরুতসাহিত করা হয়েছে ।
সুদ বা রিবা কি ? সুদ বা রিবা কত প্রকার ও কি কি
ক) রিবা আন নাসিয়াহ
খ) রিবা আল ফদল
সুদ কখন, কেন এবং কিভাবে হয়
সুদ নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে মহাগ্রন্থ আল কুরআন
সুদ নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে আল হাদিস
হাদিসের মাধ্যমে সত্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিচে কিছু হাদিসের বর্ণনা দেওয়া হলোঃ
১। যাবির রাঃ এবং আব্দুল্লাহ ইবন মাসুদ রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল সঃ সুদ দাতা, সুদ গ্রহীতা, সুদের লেখক এবং সুদের সাক্ষীদের উপর করেছেন। অভিসম্পাত। (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)
২। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, সুদের সত্তর শাখা রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ছোট সকাল হচ্ছে কোন ব্যক্তি তার মাকে বিয়ে করার সময় করল। আর প্রথম ধরনের পাপ হলো আল্লাহ তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। (ইবন মাজাহ, বায়হাকী)
৩। আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছে্ন, মিরাজ রজনীতে আমি সপ্তম আকাশে পৌঁছে যখন উপরের দিকে তাকালাম তখন বজ্রধ্বনি বিদ্যুৎ ও প্রকট শব্দ শুনতে পেলাম। অতঃপর আমি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে কাছে এলাম যাদের পেট ছিল একটি ঘরের ন্যায় বিস্তৃত। তাদের পেট ছিল সরপে ভরপুর। সাপগুলো বাহির হইতে থেকে দেখা যাচ্ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিব্রাই্ এরা কারা? তিনি বললেন, তারা হলো সুদখোর। (মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ)
৪। আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহতা'লা চার ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তাদেরকে জান্নাতের কোন নিয়ামত ভোগ করার সুযোগ দিবেন না। তারা হলো মধ্যপনকারী, সুদখোর, অন্যয়ভাবে এতিমের মাল ভক্ষণকারী এবং পিতা মাতার অবাধ্য সন্তান। (মুস্তাদারাক হাকিম)
৫। আব্দুল্লাহ ইবনে হানজালা রাঃ থেকে বর্ণিত, রসুল সঃ বলেন, মানুষ সুদ বাবদ যদি এক দিরহামও গ্রহণ করে তাহলে তার অপরাধ ইসলাম গ্রহণের পর মুসলিম থাকা অবস্থায় ৩৬ বার ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার চেয়েও মারাত্মক।(মিশকাত, মুসনাদে আহমদ )
6. Avey ûivqiv (ivt) †_‡K ewY©Z, imyj (mt) e‡j‡Qb, ¶wZKi mvZwU welq †_‡K †Zvgiv ci‡nR _vK‡e| mvnvevMণ ej‡jb, †n আল্লাহর imyj (mt), †m mvZwU welq wK ? Rev‡e wZwb ej‡jb, (1) Avjvni mv‡_ KvD‡K kixK Kiv (2) hv`y we`¨v wk¶v I cÖ`k©b (3) KvD‡K nZ¨v Kiv (4) my` LvIqv (5) GwZ‡gi gvj f¶b Kiv (6) ag© hy× †_‡K cjvqb Kiv (7) †Kvb ¯^Zx-mvaex igbx‡K Acev` †`qv| (eyLvix, gymwjg, Avey `vD`, bvmvC)
7. Avey ûivqiv (ivt) †_‡K ewY©Z, imyj (mt) e‡j‡Q্ন,my`†Lvi Rvbœv‡Z cÖ‡ek Ki‡Z cvi‡e bv| (gyস্তা`vwiK nvKxg)|
8. Avey ûivqiv (ivt) †_‡K ewY©Z, imyj (mt) e‡j‡Qb, Ggb GK hyM Avm‡e hLb †Kvb gvbylB my` e¨ZxZ evKx _vK‡e bv| †KD hw` my` bv Lvq Kg c‡¶ my‡`i †auvqv ev aywj Kbv n‡jI Zv‡K ¯úk© Ki‡e| (Avey `vD`, Be‡b gvRvn)|
9. nhiZ Avey †Rvnvqdv (ivt) Gi cyÎ eY©bv K‡ib, Avwg Avgvi wcZv‡K †`Ljvg wZwb GKwU µxZ`vm µq K‡i G‡b‡Qb| µxZ`vmwUi i³ †gv¶b Kv‡h© `¶Zv wQj| (Zvi Kv‡Q wk½v jvMv‡bvi hš¿cvwZI wQj| Avgvi AveŸv †m ¸wj †f‡½ †dj‡jb)| Avwg Avgvi wcZv‡K Hme fv½vi Kvib wR‡Ám Kijvg| wZwb ej‡jb, imyj (mvt) wb‡P ewb©Z wZb cÖKv‡ii A_© DcvR©b wbwl× K‡i‡Qb (1) gvbyy‡li kix‡i m~P we× K‡i wPÎ AsKbKvix I e¨emvqx (2) ¯^xq kix‡i H wPΩ MÖnbKvix (3) my` MÖnxZv (4) my` `vZv| (eyLvix)
10. Rvwei Be‡b Avãyjvn (ivt) e‡j‡Qb, imyjyjvn (mt) we`vq n‡Ri fvl‡b e‡j‡Qb, Rvwnjx hy‡Mi i` iwnZ Kiv nj| me©cÖ_g Avwg Avgvi Kvwejvi সুদের `vwe A_©vr PvPv AveŸv‡mi my` gvd K‡i w`jvg| myZivs mKj my`B AvR iwnZ Kiv nলো (gymwjg)
mকল a‡g©B my`‡K wbwl× Kiv n‡h‡Q| my‡`i Aïf cwibwZ wewfbœ
a‡g© ও gZev‡` N„wbZ n‡q Avm‡Q| KziAvb bvwh‡ji cy‡e© Ab¨vb¨ Avmgvbx wKZv‡e ও my`
wbwl× wQj|
Bû`x a‡g© my` নিষিদ্ধঃ
ইহুদি ধর্মে সুদ (ribbit) গ্রহণ করা নিষিদ্ধ, তবে এটি নির্দিষ্ট শর্তের ওপর নির্ভর করে। তানাখ (হিব্রু বাইবেল) এবং তালমুদ-এ সুদ সংক্রান্ত বেশ কিছু বিধান রয়েছে।ইহুদি ধর্মে সুদ সংক্রান্ত বিধানঃ
1. নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে সুদ নিষিদ্ধ:
ওল্ড টেস্টামেন্ট বা তোরাহ-এর বিভিন্ন অংশে বলা হয়েছে যে, ইহুদিরা নিজেদের সম্প্রদায়ের সদস্যদের কাছ থেকে সুদ নিতে পারবে না।
উদাহরণ: যাত্রাপুস্তক (Exodus) 22:25: "যদি তুমি আমার লোকদের, যারা দরিদ্র, তাদের টাকা ধার দাও, তবে তোমরা তাদের কাছ থেকে সুদ নিও না।"
লেবীয় পুস্তক (Leviticus) 25:36-37: "তোমার ভাইয়ের কাছ থেকে সুদ নিও না, বরং তাকে সাহায্য কর যেন সে তোমার সঙ্গে বাস করতে পারে।"
দ্বিতীয় বিবরণ (Deuteronomy) 23:19-20: "তোমার ভাইয়ের কাছ থেকে সুদ নিও না, তবে বিদেশিদের কাছ থেকে নিতে পারো।"
2. অইহুদি বা বহিরাগতদের থেকে সুদ নেওয়া অনুমোদিত:
তোরাহ অনুযায়ী, ইহুদিরা অইহুদি বা বহিরাগতদের (non-Jews) থেকে সুদ নিতে পারে। তবে এর পেছনে যুক্তি হলো, ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা।
3. ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সুদ কিছু ক্ষেত্রে অনুমোদিত:
পরবর্তীকালে ইহুদি আইনবিদরা (Rabbinic scholars) কিছু শর্তসাপেক্ষে ব্যবসায়িক লেনদেনে সুদের অনুমতি দিয়েছেন, বিশেষ করে যদি তা সরাসরি কারও ওপর অন্যায় চাপ তৈরি না করে।
L„ó a‡g© my` নিষিদ্ধ
খ্রিস্টধর্মে সুদের (interest বা usury) বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, বিশেষ করে বাইবেলের বিভিন্ন অংশে সুদগ্রহণের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
বাইবেলে সুদ সম্পর্কে উক্তি:
1. পুরাতন নিয়ম (Old Testament)
লেভিটিকাস ২৫:৩৫-৩৭ – "যদি তোমার ভাই দরিদ্র হয়ে পড়ে এবং সে তোমার সহায়তার উপর নির্ভর করে, তবে তাকে সাহায্য করো... তার কাছ থেকে সুদ বা মুনাফা নিও না।"
নেহেমিয়া ৫:৭-১০ – নেহেমিয়া ধনীদের সুদ নেওয়ার কারণে সমালোচনা করেন এবং সুদ ছাড়তে বলেন।
গীতসংহিতা ১৫:৫ – "যে ব্যক্তি সুদে টাকা দেয় না, সে কখনও নড়বড়ে হবে না।"
2. নতুন নিয়ম (New Testament)
লূক ৬:৩৪-৩৫ – "যদি তোমরা তাদের ঋণ দাও যারা তোমাদের ফিরিয়ে দেবে, তাহলে তোমাদের কী মাহাত্ম্য? বরং শত্রুদের ভালোবাসো এবং ঋণ দাও, কিছু ফেরত পাওয়ার আশা না রেখে।"
খ্রিস্টধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি:
প্রাচীনকালে ক্যাথলিক চার্চ সুদকে পাপ হিসেবে বিবেচনা করত এবং খ্রিস্টান সমাজে সুদ গ্রহণ নিষিদ্ধ ছিল। তবে রেনেসাঁ এবং আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে বিভিন্ন সময় নিয়ম শিথিল হয় এবং এখন অনেক খ্রিস্টান ব্যাংক সুদভিত্তিক কার্যক্রম চালায়।
আরো পড়ুনঃ
তবে, কিছু গোষ্ঠী (যেমন ক্যাথলিক চার্চের কিছু অংশ এবং নির্দিষ্ট ইভাঞ্জেলিকাল খ্রিস্টানরা) এখনও উচ্চ সুদকে নৈতিকভাবে ভুল মনে করে।
wn›`y a‡g© my`
হিন্দু ধর্মে সুদ (ঋণের উপর অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া) সম্পর্কে কোনো সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে ধর্মগ্রন্থ ও শাস্ত্রে সুদের নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
হিন্দু শাস্ত্রে সুদ সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি:
1. মনুস্মৃতি – মনুস্মৃতিতে সুদের হার ও এর গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে ব্রাহ্মণদের জন্য সুদ নেওয়া উচিত নয়, তবে বৈশ্য ও ক্ষত্রিয়দের জন্য নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে এটি অনুমোদিত।
2. অর্থশাস্ত্র (কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র) – চাণক্যের অর্থশাস্ত্রে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং এটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে বিবেচিত হতো।
3. ধর্মশাস্ত্র – কিছু ধর্মগ্রন্থে সুদকে অনৈতিক বলা হয়েছে, বিশেষ করে অত্যধিক সুদের হারকে (যেমন মহাজনী সুদ) শোষণ হিসেবে দেখা হয়েছে।
Ab¨vb¨ `k©b I mvwn‡Z¨ my` wbwl×
সুদ (ব্যক্তিগত ঋণের উপর অতিরিক্ত সুদ গ্রহণ) অনেক ধর্ম ও দর্শনশাস্ত্রে নৈতিকভাবে অনুচিত বা নিষিদ্ধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। শুধু ইসলাম নয়, খ্রিস্টধর্ম, ইহুদিধর্ম, হিন্দুধর্ম এবং বিভিন্ন প্রাচীন দার্শনিক ও সাহিত্যিক গ্রন্থেও সুদের বিরোধিতা করা হয়েছে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ দেওয়া হলো:
1. গ্রিক দর্শন
গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল সুদকে "অপ্রাকৃতিক" বলেছিলেন, কারণ অর্থের নিজস্ব কোনো উত্পাদন ক্ষমতা নেই। প্লেটোও সুদকে অশুভ বলে মনে করতেন।
2. প্রাচীন সাহিত্য ও নৈতিক দর্শন
শেক্সপিয়ারের "দ্য মার্চেন্ট অফ ভেনিস" নাটকে সুদের কুফল দেখানো হয়েছে।
চীনা ও বৌদ্ধ ধর্মেও লোভের বিরুদ্ধে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, যা সুদের সঙ্গে সম্পর্কিত।
অর্থাৎ, প্রায় সব প্রধান ধর্ম ও দর্শনেই সুদকে অন্যায় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, কারণ এটি ধনী-গরিবের বৈষম্য বৃদ্ধি করে এবং নৈতিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।
আমাদের শেষ বক্তব্য
আমি আপনাদের নিকট বিভিন্ন ধর্মে সুদ নিষিদ্ধের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনি আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে হলে আমাদের এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আমরা নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ের উপর কন্টেন্ট প্রকাশ করে থাকে। তাই নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন তাহলে অনেক বিষয় জানতে পারবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url