বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু পর্যটন স্থান সম্বন্ধে জেনে নিন

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ টিপসবাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু পর্যটন স্থান সম্পর্কে জানতে আমরা ভ্রমণ পিপাসুরা অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে থাকি। বাংলাদেশ সবার কাছে মিষ্টি পরবাসী দেশ হিসেবে পরিচিত। তার সমৃদ্ধি, ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মিলিয়ে এই দেশটি পর্যটকদের জন্য এক আদর্শ গন্তব্য।

বাংলাদেশের-অন্যতম-পর্যটন-স্থান-কক্সবাজারএখানে আছে ঐতিহাসিক স্থাপনা, সুন্দর সমুদ্র সৈকত, পাহাড়ি অঞ্চলের প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং নানা প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু পর্যটন স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পোস্ট সূচিপত্র: বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু পর্যটন স্থান সম্বন্ধে জেনে নিন

বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু পর্যটন স্থান সম্পর্কে জেনে নিন

বাংলাদেশে রয়েছে নানা ধরনের পর্যটন স্থান যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে বৈচিত্র্যে পূর্ণ। পর্যটকদের জন্য বাংলাদেশে রয়েছে অসাধারণ সব গন্তব্য যা প্রকৃতি প্রেমিক, ইতিহাস প্রেমী এবং সাংস্কৃতিক অনুসন্ধানী সবাইকে আকর্ষণ করে। বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্থান গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কক্সবাজার যা বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচিত। এখানকার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য অত্যন্ত মনমুগ্ধকর। পর্যটকদের জন্য কক্সবাজারের জনপ্রিয় স্থানগুলো হলো ইনানী বীচ, মহেশখালী দ্বীপ, মেরিন ড্রাইভ এবং কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।

আরো পড়ুনঃ সাজেক হোটেল বুকিং

এটি পর্যটকদের জন্য একটি প্রধান গন্তব্য যেখানে সমুদ্রের নীল জল, সাদা বালু এবং হালকা ঠান্ডা বাতাস অভিজ্ঞতাকে আরো রোমাঞ্চকর করে তোলে। এছাড়াও আরেকটি অন্যতম পর্যটন স্থান হলো সুন্দরবন। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন যেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, কুমির এবং নানা প্রজাতির পাখি বাস করে। এটি একটি ইউনেস্কো ঐতিহ্য স্থান এবং এক অত্যন্ত জনপ্রিয় ওয়ায়াইল্ড লাইফ।

এছাড়াও বাংলাদেশে রয়েছে একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন যা বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে এক অদ্বিতীয় জায়গা। এখানে রয়েছে সাদা বালু, প্রবাল এবং সমুদ্রের ছাপানো ঢেউ। এছাড়াও বাংলাদেশ এর একটি জায়গা হলো শ্রীমঙ্গল যাকে চায়ের রাজধানী বলা হয় কারণ এখানে অবস্থিত বহু বিখ্যাত চা বাগান রয়েছে। শ্রীমঙ্গল তার পাহাড়ি সৌন্দর্য, চা বাগান, হালকা ঠান্ডা আবহাওয়া এবং সহজ প্রকৃতির জন্য অনেক প্রিয়। এছাড়াও রয়েছে সিলেট পাহাড়, ঝর্ণা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত।

আবার নওগা জেলায় অবস্থিত পাহাড়পুর একটি ঐতিহাসিক জায়গা। বগুড়ার মহাস্থানগড় একটি প্রাচীন বৌদ্ধ শহর যা বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান। এটি এক সময় বাংলার রাজাদের রাজধানী ছিল। এখানে রয়েছে অনেক পুরনো মন্দির, ভাস্কর্য এবং শিলালিপি যা প্রাচীন বাংলার ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। এছাড়াও বাংলাদেশের আরেকটি পর্যটন স্থান হচ্ছে নীলগিরি যা বান্দরবানে অবস্থিত। যেখানে আপনি পাহাড় থেকে বাংলাদেশের সব থেকে উচ্চতা থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে পারবেন।

এটি প্রকৃত প্রেমী এবং ট্র্যাকিং করার জন্য আদর্শ জায়গা। এখানকার বিশাল পাহাড় এবং সবুজ বনভূমি এক অসাধারণ দৃশ্য সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের পর্যটন স্থানগুলো একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে ভরা তেমনি ইতিহাস ও সংস্কৃতিতেও ভরপুর। দেশের প্রতিটি কোনায় রয়েছে কিছু বিশেষত্ব যা আপনাকে মুগ্ধ করবে। আপনি যেখানেই যান না কেন বাংলাদেশের পর্যটন স্থান নিয়ে আপনাদের অসাধারণ অভিজ্ঞতা হবে। আশা করি আপনারা বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু পর্যটন স্থান সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।

বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্থান কক্সবাজার

বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু পর্যটন স্থান গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কক্সবাজার। কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব কোণে চট্টগ্রাম বিভাগের একটি জেলা। এটি বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত এবং দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য গুলোর মধ্যে অন্যতম। কক্সবাজার বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচিত। কক্সবাজার শুধুমাত্র সৈকতের জন্য নয় এটি একটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক স্থানে পরিণত হয়েছে যেখানে নানা প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে।

বাংলাদেশের-পর্যটন-স্থান-বান্দরবানকক্সবাজার সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত যেখানে পর্যটকরা সাঁতার, হাঁটাচলা, সামগ্রিকভাবে খেলা এবং সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। এছাড়াও এখানে রয়েছে ইনানী বিচ যেটি কক্সবাজার থেকে ৩২ কিলোমিটার দক্ষিণ অবস্থিত। এখানকার পরিষ্কার পানি, সাদা বালু এবং প্রবাল মনে শান্তি এনে দেয়। এখানে রয়েছে মহেশখালী দ্বীপ। কক্সবাজার থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের পথে পৌঁছানো যায় মহেশখালী দ্বীপে।

এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য যেখানে রয়েছে মন্দির, বোদ্ধ-মঠ এবং স্নান করার স্থান। মহেশখালী দ্বীপের প্রধান আকর্ষণ হলো কালা পাহাড় এবং এখানে পাওয়া যায় উন্মুক্ত সমুদ্রের দৃশ্য। এছাড়াও মেরিন ড্রাইভ কক্সবাজার শহরের কেন্দ্র থেকে শুরু হয় ইনানী বীচ পর্যন্ত চলে। এটি একটি সুন্দর রাস্তা। রাস্তাটি সমুদ্রের পাশ দিয়ে চলে এবং এখানে হাঁটতে বা গাড়িতে ভ্রমণ করতে অনেক ভালো লাগবে। এছাড়াও কক্সবাজার থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হিমছড়ি।

এটি একটি পাহাড়ি এলাকা যেখানে আপনি সমুদ্রের সাগর, তীর ও সবুজ প্রকৃতির একত্রিত দৃশ্য দেখতে পাবেন। এছাড়াও এখানে রয়েছে জলপ্রপাত এবং তার চারপাশের পরিবেশ সৌন্দর্য পর্যটকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে। এছাড়াও কক্সবাজারে ভ্রমন করলে আপনি রামু, টেকনাফ ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গা গুলো পরিদর্শন করতে পারেন। কক্সবাজার ভ্রমণের সেরা সময় হলো নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে যখন সেখানে শীতকাল হয়ে থাকে এবং আবহাওয়া থাকে প্রশান্ত।

এই সময়ের সৈকতে ভ্রমণ ও বিভিন্ন খেলার আনন্দ সবচেয়ে বেশি উপভোগ করা যায়। কক্সবাজার কেবল দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত নয় এটি একটি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহাসিক স্থান। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং নানা ধরনের পর্যটন স্থান কক্সবাজারকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান পর্যটন গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই আপনি যদি সমগ্র প্রকৃতি ইতিহাস এবং সংস্কৃতির মিশ্রণ উপভোগ করতে চান তবে কক্সবাজার হতে পারে আপনার পরবর্তী ভ্রমণের সেরা গন্তব্য।

বাংলাদেশের পর্যটন স্থান সুন্দরবন সম্পর্কে জেনে নিন

সুন্দরবন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবস্থিত একটি বিশাল ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল এটি মূলত বাংলাদেশের খুলনা, বাগেরহাট এবং সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে বিস্তৃত। সুন্দরবন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এটি ৩৮০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত যার মধ্যে প্রায় ৬০% বাংলাদেশের আওতায় পড়ে। সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। সুন্দরবনে রয়েছে সবচেয়ে বিখ্যাত প্রাণী রয়েল বেঙ্গল টাইগার।

এই টাইগার পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ টাইগার। সুন্দরবনের টাইগার গুলো বিশেষভাবে বন্য ও বিপন্ন প্রজাতির এবং এখানকার পরিবেশে তারাই বেঁচে থাকে তারাই সুন্দরবনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। এছাড়াও সুন্দরবন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুভূতপূর্ব নিদর্শন। এখানে রয়েছে বিশাল অরণ্য, নদী, জলভূমি এবং একাধিক খাল যা বনাঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখে। এছাড়াও এখানে বাস করে নানা প্রজাতির পাখি, মিঠা পানির ডলফিন, কুমির, বানর, সাপ এবং নানা ধরনের জলজ প্রাণী। সুন্দরবন একটি জাতীয় উদ্যান এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবেও পরিচিত।

এখানে নানা ধরনের প্রজাতির পশু পাখি বসবাস করে যার মধ্যে রয়েছে ভাল্লুক, জলহস্তী, মিঠা পানির ডলফিন বানর এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। সুন্দরবনের প্রধান পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে কর্ণদিয়া বিচ, টাইগার পয়েন্ট, শিববাড়ি, পচাকোরাল, দেউলবাড়ি। সুন্দরবন ভ্রমণের সেরা সময় হলো শীতকাল। এই সময় আবহাওয়া ঠান্ডা এবং পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত। কারণ গ্রীষ্মকালে দৃশ্যে গুলো উপভোগ করা এবং ভ্রমণ করা একটু অস্বস্তিকর হতে পারে।

আবার বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং স্রোতের কারণে নদী ও খাল গুলো ভরপুর হয়ে যেতে পারে মানে কিছু সমস্যা হতে পারে। সুন্দরবনের ভ্রমণের প্রধান মাধ্যম হলো নৌকা এখানে পর্যটকদের সাধারণত ছোট নৌকা বা কাঠের কাঠিতে চেপে জঙ্গলে এবং নদীর ভ্রমন করতে হয় এটি ভ্রমণের মূল আকর্ষণ হিসেবে বিবেচিত।

সুন্দরবন শুধু বাংলাদেশের নয় বিশ্বের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীব বৈচিত্র‍্য সংরক্ষণ অঞ্চল। এটি একদিকে যেমন ম্যানগ্রোভ বনের অন্যতম উদাহরণ তেমনি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বাসস্থান এবং অন্যান্য বন্য প্রাণীর এক নিরাপদ আশ্রয়। এখানে আসলে আপনি প্রকৃতির সবচেয়ে কাছাকাছি অনুভব করবেন যেখানে শান্ত, সুন্দর এবং বিপন্ন প্রকৃতি একত্রিত ভাবে অনুভব করবেন।

পর্যটন স্থান সেন্ট মার্টিন সম্পর্কে জেনে নিন

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ এবং মিয়ানমারের সাথে সীমানায় অবস্থিত। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাদা বালুকাবেলা, নীল জলরাশি এবং সমুদ্রের শান্ত পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য একেবারে অন্যরকম যেখানে আপনি সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারবেন।

এখানে রয়েছে প্রবাল প্রাচীর। দ্বীপের চারপাশে বিস্তৃত প্রবাল প্রাচীর যা পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ। এছাড়াও শান্ত ও নির্জন সৈকত যেখানে পর্যটকরা খোলা আকাশের নিচে বিশ্রাম নিতে পারেন। আবার দ্বীপের স্থানীয় বাজারে তাজা সমুদ্রের মাছ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক খাবার পাওয়া যায়। সেন্টমার্টিন মূলত শান্তিপূর্ণ ভ্রমণের জনপ্রিয় গন্তব্য এখানে যানবাহন খুবই সীমিত এবং পর্যটক প্রায় সাধারণত নৌকায় করে পৌঁছান।

নভেম্বর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে এখানে ভ্রমণ করা সবচেয়ে উপযুক্ত কারণ এই সময়টা আবহাওয়া শীতল এবং মৃদু থাকে। মূলত টেকনাফ থেকে নৌকা অথবা স্পিডবোট বা জাহাজে করে সেন্ট মার্টিন পৌঁছানো যায়।

পর্যটন স্থান শ্রীমঙ্গল সম্পর্কে জেনে নিন

শ্রীমঙ্গল বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার একটি ছোট শহর যা সিলেট বিভাগের অন্তর্গত। এটি পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত এবং বাংলাদেশের চা বাগানের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। শ্রীমঙ্গল চায়ের রাজধানী হিসেবে পরিচিত। কারণ এখানে রয়েছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম চা বাগান। এখানকার পাহাড়ি পরিবেশ, সবুজ গাছপালা, ঝরনা এবং ঠান্ডা আবহাওয়া পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। শ্রীমঙ্গল তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শান্ত পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের জন্য বিখ্যাত। শ্রীমঙ্গলে প্রচুর চা বাগান রয়েছে যা পর্যটকদের জন্য অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।

এছাড়াও এখানে রয়েছে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত যা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি জনপ্রিয় জায়গা হচ্ছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান যেখানে নানা ধরনের পশু পাখি এবং গাছপালা দেখা যায়। এখানে সাধারণত এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং চা বাগান দেখতে পর্যটকেরা আসেন। শ্রীমঙ্গলে ভ্রমণের সেরা সময় হলো শীতকাল যখন আবহাওয়া ঠান্ডা আরামদায়ক থাকে। এটি প্রকৃতিপ্রেমিকদের জন্য একটি আদর্শ জায়গা।

বাংলাদেশের পর্যটন স্থান সিলেট সম্পর্কে জেনে নিন

বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু পর্যটন স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি স্থান হচ্ছে সিলেট। সিলেট বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। এটি ভারতীয় সীমান্তের কাছে অবস্থিত এবং পাহাড়ে অঞ্চলের জন্য পরিচিত। সিলেট তার মনোরম পাহাড় সবুজবাগান ঝর্ণা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এটি ধর্মীয় স্থানের জন্যও পরিচিত বিশেষ করে হযরত শাহজালাল ও শাহপরান মাজারের জন্য।

সিলেট অঞ্চলের গারো সবুজ প্রকৃতি এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এখানে আসা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এখানে রয়েছে বিছানাকান্দি, জাফলং, লালাখাল, হযরত শাহজালাল ও শাহপরান এর মাজার ইত্যাদি যেগুলো দেখার জন্য পর্যটকেরা ভিড় করে থাকেন। পাহাড়ি ঝরনা এবং পাথর ভাঙ্গা নদী দেখতে এখানে অনেক পর্যটক আসেন।

সিলেটে ভ্রমণের সেরা সময় হলো শীতকাল যখন আবহাওয়া ঠান্ডা এবং আনন্দ থাকে বর্ষাকালে সিলেটের সৌন্দর্য আরো বেড়ে যায় তবে এই সময় বৃষ্টিপাত বেশি থাকে। সিলেট তার পাহাড়ি সৌন্দর্য ঝর্ণা চা বাগান এবং ধর্মীয় স্থানগুলোর জন্য পরিচিত। এটি প্রকৃতিপ্রেমী এবং শান্তি প্রেমে পর্যটকদের জন্য আদর্শ গন্তব্য।

পর্যটন স্থান পাহাড়পুর সম্পর্কে জেনে নিন

পাহাড়পুর বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলায় অবস্থিত এটি ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় এবং রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত। পাহাড়পুর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার এবং ইতিহাসের এক অমূল্য নিদর্শন। এটি সে সময়ের বিখ্যাত শিক্ষা কেন্দ্র এবং এক বিশাল বৌদ্ধমত হিসেবে পরিচিত। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক এটি বিশ্ব ঐতিহ্য ঐতিহ্য স্থান হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। এখানকার প্রধান আকর্ষণ হল বৌদ্ধবিহার, আর্কিওলজিক্যাল সাইট, বিশ্ববিদ্যালয়।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারটির নির্মাণ সম্ভবত সপ্তম শতকের শেষ দিকে পাল আমলে। এটি ৩০ একর জমির উপর বিস্তৃত এবং প্রায় ১৭৬ টি ছোট বড় কক্ষ নিয়ে গঠিত। এখানকার প্রাচীন মূর্তির ফলক ও খোদাই করা স্তম্ভ গুলি প্রাচীন বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির সাক্ষী। সন্ন্যাসী শিক্ষা লাভ করতেন। পাহাড়পুর একটি ঐতিহাসিক বৌদ্ধ বিহার যা বাংলাদেশের প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন ইতিহাস এবং সংস্কৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি অমূল্যবান গন্তব্য।

বাংলাদেশের পর্যটন স্থান নীলগিরি সম্পর্কে জেনে নিন

নীলগিরি বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। এটি বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অবস্থিত এবং মূল শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের মধ্যে। নীলগিরি নামের মত এক অনন্য পাহাড়ের স্থান যেখানে পাহাড়ের সারি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনমুগ্ধকর। নীলগিরি তার অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য পরিচিত। এটি পাহাড়, মেঘ ও ঘন জঙ্গল দিয়ে পরিবেষ্টিত একটি জায়গা যেখান থেকে পাহাড়ের শৃঙ্গ গুলি দেখতে পারেন যা প্রায় সব সময় মেঘে ঢাকা থাকে। এটি প্রকৃতি প্রেম এবং এডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য এক আদর্শ গন্তব্য।

পর্যটন-স্থান-পাহাড়পুর-সম্পর্কে-জেনে-নিনএখানে গেলে আপনি পাহাড়ি দৃশ্য দেখতে পাবেন। নীলগিরির পথে রুমা বাজারে যেতে হবে যা বান্দরবান জেলা থেকে পৌঁছানো যায়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার যেখানে স্থানীয় জনগণের সাথে মেলামেশা করতে পারবেন। এখানে পাহাড়ের চূড়া থেকে অপরূপ দৃশ্য দেখতে পাবেন এছাড়া বিভিন্ন পানির ঝরনা দেখতে পাবেন। নীলগিরি বাংলাদেশের সুইজারল্যান্ড হিসেবে পরিচিত। পাহাড়, মেঘ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অবিস্মরণীয় গন্তব্যটি প্রকৃতির প্রেমী ও অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ জায়গা যেখানে আপনি পাহাড়ি শান্ত পরিবেশ ও মেঘের মধ্যে হারিয়ে যেতে পারবেন।

ঢাকার পর্যটন স্থান গুলো সম্পর্কে জানুন

ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় শহর। এটি আধুনিক এবং ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অন্যান্য মিশ্রণ। এখানে আপনি প্রাচীন মসজিদ, মন্দির, মিউজিয়াম, ঐতিহাসিক স্থান, আধুনিক শপিংমল এবং বিনোদনের জায়গাগুলো উপভোগ করতে পারবেন। ঢাকার পর্যটন স্থানগুলো মূলত শহরের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলোর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এখানে রয়েছে লালবাগ কেল্লা যা পুরান ঢাকায় অবস্থিত। লালবাগ কেল্লা যা মুঘলদের এর একটিভিশন নিদর্শন ১৬৭৮ সালের যেটি নির্মিত হয়।

আরো পড়ুনঃ কক্সবাজারে ভালো মানের হোটেলের তালিকা

এটি মুঘল আমলের অবশিষ্ট সুরক্ষা দুর্গ এবং ঐতিহাসিক ভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেল্লার ভেতরে রয়েছে একটি মসজিদ, দুর্গ সমাধি ইত্যাদি। এটি ঢাকার প্রাচীন স্থাপত্য এবং ইতিহাস জানার জন্য আদর্শ জায়গা। এছাড়াও পরিমাণে মসজিদ রয়েছে। এছাড়াও ঢাকার জাতীয় জাদুঘর যা শাহবাগে অবস্থিত। জাতীয় জাদুঘর টি বাংলাদেশের ইতিহাস সংস্কৃতি শিল্প এবং প্রত্নতত্ত্বের বিশাল সংগ্রহ স্থলে এটি দেশের সবচেয়ে বড় জাদুঘর।

এখানে বিভিন্ন বিভাগের সংরক্ষিত রয়েছে প্রাচীন নিদর্শন প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত জিনিসপত্র। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং ব্যস্ত বিমানবন্দর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য প্রধান প্রবেশদ্বার। এছাড়াও এখানে রয়েছে পদ্মা সেতু, কাওরান বাজার, আর্মি স্টেডিয়াম, বোটানিক্যাল গার্ডেন, নীলসাগর ইত্যাদি।

ঢাকা শহরটি তার ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও আধুনিক দিক দিয়ে পর্যটকদের জন্য একটি পরিপূর্ণ গন্তব্য এখানে প্রাচীন মসজিদ, মন্দির, মিউজিয়াম, বাগান এবং আধুনিক শপিংমল রয়েছে যা প্রতিদিন হাজারো পর্যটককে আকর্ষণ করে।

আমাদের শেষ কথা

বাংলাদেশে রয়েছে অসংখ্য প্রাকৃতিক, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থান যা পর্যটকদের কাছে অপরিসীম আকর্ষণ। দেশের প্রতিটি প্রান্তে রয়েছে অমলিন সৌন্দর্য যা সবাইকে মুগ্ধ করে। আপনি যদি প্রকৃতি প্রেমিক হন অথবা ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী হন তাহলে বাংলাদেশ আপনার জন্য আদর্শ গন্তব্য। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু পর্যটন স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করতে থাকুন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। 33612

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url